টানা দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা বাংলাদেশের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে এশিয়ার ‘আয়রন লেডি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ব্রিটেনের বিখ্যাত সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফররত অবস্থায় শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নেয় দ্য ইকোনমিস্ট। সাক্ষাৎকারটি বুধবার (২৪ মে) সাময়িকীটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
‘এশিয়ার আয়রন লেডি শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে পচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হারানোর পর শেখ হাসিনার যেই সংগ্রাম ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যেই প্রচেষ্টা সেগুলো তুলে ধরা হয়।
ইকোনমিস্ট লিখেছে, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী নারী সরকারপ্রধান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দুই দশক ধরে ১৭ কোটি মানুষের দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বাধীন বেশিরভাগ সময় ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ টানা তিনবার নির্বাচনে জয়লাভ করেছে এবং সর্বমোট চারবার। যা ইন্দিরা গান্ধী ও মার্গারেট থ্যাচারের চেয়ে একবার বেশি। আগামী নির্বাচনেও তিনি জয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
সাক্ষাতকারে পচত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমার দুই ভাইকে, আমার মাকে, আরেক ভাইকে হত্যা করেছে মাত্র দশ বছর বয়সী! আমার দুই বোন জামাই (কাজিন), আমার একমাত্র চাচা, একজন প্রতিবন্ধী, তাকেও হত্যা করেছে।’ এসব কথা বলার সময় তার চোখ অশ্রুতে ভিজে যায়।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ করতে চাই।
সাক্ষাৎকারে অর্ধশতাব্দী আগে সেনাশাসনের অধীনে গঠিত বিএনপিকে ‘একজন সামরিক শাসক কর্তৃক অবৈধভাবে গঠিত’ রাজনৈতিক দল হিসেবে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কেবল ‘প্রকৃত রাজনৈতিক দলকেই’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেওয়া উচিত। পাকিস্তানের সাবেক মিত্র দেশের সবচেয়ে বড় একটি ইসলামি দল; যাদের প্রায় সবাই যুদ্ধাপরাধী। বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া এমন কোনো দল নেই, যারা সত্যিই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।
ইকোনমিস্ট লিখেছে, শেখ হাসিনার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এক সাহসিকতার গল্প। এর মধ্যে কিছু তার নীতিগত সাফল্য, যা তিনি দাবি করতে পারেন। তার সরকারের সর্বশেষ পরিকল্পনার শিরোনাম হলো ‘ভিশন-২০৪১’।