চীনের ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডং দুই দিনের সফরে আগামী শুক্রবার ঢাকা আসছেন। আগামী শনিবার তিনি দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তবে তার এ সফর নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি)। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
জানা গেছে, এফওসিতে অংশ নেওয়া ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন চীনের ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডং। তবে কার কার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সূত্র জানায়, শনিবারের আলোচনায় ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রাজনীতি, রোহিঙ্গা সংকটসহ সম্পর্কের সব বিষয় নিয়েই কথা হবে। এজেন্ডায় সামরিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকছে বলে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বেইজিং প্রস্তাবিত গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভে (জিডিআই) বাংলাদেশের যোগদান নিয়ে আলোচনা চলছে। এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের সর্বশেষ সংশোধিত খসড়া এখন ঢাকার বিবেচনায়। শনিবারের এফওসিতে এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা এবং সমঝোতাটি চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) পর জিডিআইকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে দেখছে বেইজিং। এর অধীনে বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের চীনহিতৈষী দেশগুলোকে আরও কাছাকাছি নিতে চায় বেইজিং। সেই সঙ্গে দেশগুলোর কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার আকাক্সক্ষা রয়েছে শি জিনপিং সরকারের।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিন গ্যাংয়ের ঢাকায় নজিরবিহীন যাত্রাবিরতি এবং গত মাসে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দূতের বাংলাদেশ সফরের পর দেশটির উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধির এটাই প্রথম ঢাকা সফর। তা ছাড়া সান ওয়েইডং ভাইস মিনিস্টারে দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসছেন। ভাইস মিনিস্টারের দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি ভারত ও পাকিস্তানে চীনের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে এই সফরের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।