গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নগরবাসীর হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করার কথা বললেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজবাসায় নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি নয় দফার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এসময় তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
জায়েদা খাতুন তার ইশতেহারে উল্লেখ করেন, তিনি নির্বাচিত হতে পারলে নগরের নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেবেন। তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে কাজের সুযোগ তৈরি করবেন। উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নারীদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিনাসুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেবেন।
তিনি জানান, নির্বাচিত হলে মেয়রের সঙ্গে নগরবাসীর যোগাযোগ সহজ করতে ‘কল টু মেয়র’ নামের অ্যাপস চালু করবেন। ই ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবা ডিজিটাইলেশন ও সহজতর করবেন। শিল্পকারখানার মালিকদের ট্যাক্সের হার এক শতাংশ করবেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপক পরিবর্তন করে নগরে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ‘গার্বেজ ডিস্পোজাল পাওয়ার প্লান্ট’ স্থাপন করবেন।
জায়েদা খাতুন বলেন, প্রতি ওয়ার্ডে সোলার এলইডি স্থাপন, প্রতি রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, রাতের নিরাপত্তার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক নাইটগার্ড নিয়োগ দেওয়া হবে। মহানগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবার জন্য নগরীতে অত্যাধুনিক চারটি স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, ওয়ার্ডভিত্তিক মিনি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ফ্যামেলি ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে।
মসজিদ-মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম ও খতিবদের সিটি করপোরেশন থেকে মাসিক সম্মানি প্রদান, প্রতি ওয়ার্ডে কবরস্থান নির্মাণ, নারীদের নামাজসহ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনে বিশেষায়িত মসজিদ নির্মাণ, বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করে কাজ করার কথা বলেন।
নগরবাসী শিক্ষার জন্য প্রতিটি বেসরকারি কিন্ডারগার্ডেনের শিক্ষকদের বেতন সিটি করপোরেশন থেকে প্রদান, বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ, খেলার মাঠ, ইনডোর প্লে গ্রাউন্ড স্থাপন, কনভেনশন সেন্টার ও অডিটোরিয়াম নির্মাণ, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।
গাজীপুরে কর্মরত বিভিন্ন কারখানা শ্রমিকদের জন্য ডিজিটাল ডাটাবেস তৈরি, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নির্মিত হাসপাতালে নামমাত্র খরচে শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, শ্রমিকদের কল্যাণে ট্রেড ইউনিয়ন চালু করা, অসহায়-কর্মহীন শ্রমিকদের বিশেষ প্রণোদনা ও কর্মের ব্যবস্থা করা, ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন, কর্মজীবী নারীদের স্বল্পমূল্যে থাকার জন্য কর্মজীবী হোস্টেল তৈরি করার কথা বলেন জায়েদা খাতুন।
স্বতন্ত্র এ প্রার্থী বলেন, মাদক ও সন্ত্রাসের নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন, সড়ক মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ, মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন, ওয়ার্ডভিত্তিক সন্ত্রাসবিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন, নগরের বস্তিবাসীদের জন্য বহুতল ভবনে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করে তাদের পুনর্বাসন, বয়স্ক ও অসহায় পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন, সিটি করপোরেশনে কর্মরত সবার জবাবদিহির মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্লিন সিটি ও গ্রিন সিটি বাস্তবায়নে বৃক্ষরোপণ, বেকাদের জন্য পার্টটাইম কাজের সুযোগ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন।