নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব হয়নি। প্রচলিত আইনে ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত গাইবান্ধার মতো একটি আসনের পুরো ভোট বন্ধ করতে পারবে ইসি।
আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, নতুন আইনে ফলাফল ঘোষণার পরও নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা চেয়েছিল ইসি। সেটা সম্ভবত সরকার দিচ্ছে না। তবে কেন্দ্রের ফল প্রকাশের পরও ভোট বাতিল করতে পারবে কমিশন। সুতরাং ইসির ক্ষমতা খর্ব হয়নি বরং কিছুটা বেড়েছে।
ইসি রাশেদা বলেন, নির্বাচনের ফলাফলের তিনটা পর্যায় আছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রে কেন্দ্রে একটা রেজাল্ট দেন, এই রেজাল্ট চারটা কপি করা হয়। একটা প্রার্থীদের জন্য, একটা সাঁটানোর জন্য, একটা রিটার্নিং কর্মকর্তার জন্য, আরেকটা কপি করতে হয়। এগুলো করার পর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠান। সেই রেজাল্ট হলো প্রাইমারি রেজাল্ট, চূড়ান্ত নয়। ওটার ওপর কে জিতল তার কার্যক্রম শুরু হবে না। শুরু হবে তখন, যখন কমিশন থেকে গেজেট হবে।’
তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তারা কমিশনে ফলাফল পাঠানোর সময় কিছু অভিযোগ আসে। কিন্তু এই অভিযোগের বিষয়ে কমিশনের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। সেই অভিযোগের বিষয়ে কমিশন কিছু করতে পারে না। তাকে গেজেটটা করে দিতে হয়। তখন কমিশনের প্রতি অভিযোগকারীদের একটা অনাস্থা থেকে যায়। একটা ক্ষোভ কিন্তু তৈরি হয়। এই জায়গা আমরা নতুন প্রস্তাবনা পাঠালাম সংশোধনীতে, যেটা মন্ত্রিপরিষদে গেছে। আমরা চেয়েছিলাম কোনো অভিযোগ আসলে কমিশন সেই গেজেট নোটিফিকেশনটা স্থগিত রাখবে। এরপর তদন্ত করে যদি অভিযোগটার সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে আসনটার ভোট বাতিল করার। মন্ত্রিপরিষদ পুরো আসনের কথাটা বাদ দিয়ে অনুমোদন দিয়েছে। আমরা পুরোটা কপি এখনো দেখিনি।’
গাইবান্ধার ভোট প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, ‘গাইবান্ধায় আমরা যখন সিসি ক্যামেরায় নানা ধরনের অনিয়ম দেখছিলাম, গোপন কক্ষের মধ্যে ভোটার ভোট দেওয়ার আগেই অন্য কেউ দিয়ে দিচ্ছেন। তখন আমরা ৯১ (ক) অনুচ্ছেদের ক্ষমতা বলে নির্বাচন বন্ধ করেছি। এখন আমরা চাচ্ছি, এক বা একাধিক কেন্দ্রে রিটার্নিং কর্মকর্তার ফলাফল ঘোষণার পর এবং গেজেট হওয়ার আগ পর্যন্ত, এই মধ্যবর্তী সময়ে অভিযোগ এলে যেন তদন্ত করে বন্ধ করতে পারি। তখন সেখানে নতুন করে ভোট হবে। ’
সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ সংশোধনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। তারপরই বিতর্ক ওঠে নির্বাচন কমিশন পুরো আসনে ভোট বাতিলের ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে।