ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহে দেখা দেওয়া সংকট উত্তরণে আরও অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের উন্নতি হবে। তবে গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গত শুক্রবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় গত শুক্রবার রাত থেকে মহেশখালীর ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা এলএনজি পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। টার্মিনাল বন্ধ থাকায় পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্যাসের চাপও কমে গেছে। এতে
করে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার আবাসিক চুলা জ¦ালাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘দুটি ভাসমান টার্মিনালের মধ্যে একটি গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। আর উপকূলের কাছাকাছি থাকা টার্মিনালটি থেকে শিগগিরই এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। এতে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি আগামী দুই দিনের মধ্যে এখনকার চেয়ে ভালো হবে। গভীর সমুদ্রে থাকা ভাসমান টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতে পারে। গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হলে আশা করছি লোডশেডিং পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।’
সামগ্রিকভাবে লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে কিনা, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রভাবটা থাকবে- তবে খুব বেশি নয়। একটা যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আর থাকবে না। আগামী দুই দিনের মধ্যেই লোডশেডিং পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, এলএনজির ভাসমান দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে গত শুক্রবারও ৬২ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। দিনে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪০০ কোটি ঘনফুট। সাধারণত সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয় গড়ে ২৮০ থেকে ২৮৫ কোটি ঘনফুট। এতে সব সময়ই সরবরাহ ঘাটতি থেকে যায়। এক খাতে বন্ধ করে অন্য খাতে সরবরাহ বাড়ানোর (রেশনিং) মাধ্যমে ঘাটতি সমন্বয় করা হয়। এর মধ্যে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে আসে ২১৫ থেকে ২২০ কোটি ঘনফুট। এলএনজি বন্ধ হওয়ায় গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি বেড়ে গেছে। এতে করে গ্যাস ও বিদ্যুতে সংকটে পড়েছেন রাজধানী ও বন্দরনগরীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন।