বাংলাদেশের দেয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭ রানে স্টিফেন ডোহানির উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ১২৩ রানের জুটি গড়ে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান ওপেনার পল স্টার্লিং ও তিনে নামা অ্যান্ডি বলবার্নি। দুজনেই তুলে নিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। অবশেষে এবাদত হোসেনের আঘাতে ভাঙলো এ জুটি।
২৭তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিডউইকেটে রনি তালুকদারের হাতে ক্যাচ দেন আইরিশ অধিনায়ক। যাওয়ার আগে ৭৮ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন তিনি।
এদিকে শুরুতে রয়েসয়ে খেললেও আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসতে থাকেন স্টার্লিং। ৫৮ বলে করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৭ ওভার ২ বল শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে ব্যাট করছে আয়ারল্যান্ড। ৫৮ রানে ব্যাট করছেন ওপেনিংয়ে নামা পল স্টার্লিং। অপরপ্রান্তে ৫ রানে ব্যাট করছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি টেক্টর। জয়ের জন্য এখনো আইরিশদের দরকার ১৪১ রান।
এর আগে, প্রথম ইনিংসে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান করে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪ রান করে বিদায় নেন রনি। তবে রনি ফিরলেও রানের গতি দারুণভাবে বজায় রেখেছিলেন ব্যাট করছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬৭ রানের মাথায় ফেরেন শান্তও। দৃষ্টিনন্দন সব বাউন্ডারিতে ৩২ বলে ৩৫ করেন তিনি। দলীয় ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্রেইগ ইয়ংয়ের বলে স্লিপে শান্তর ক্যাচ ধরেন অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবর্নি। এরপর চারে নামা লিটন দাসকে নিয়ে জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে দলীয় ১৩৭ রানে লিটনের বিদায়ে ভাঙে ৭০ রানের জুটি।
৩৯ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ রান করে ফেরেন লিটন। লিটনের বিদায়ে মাঠে নামেন আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া তাওহীদ হৃদয়। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৫৯ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন তিনি। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে পতন হয় তামিমের। ১৮৬ রানের মাথায় জর্জ ডকরেলের করা ৩৪তম ওভারের তৃতীয় বলে লিডিং এজ হয়ে ক্যাচ উঠিয়ে দেন তামিম। সহজ ক্যাচ লুফে নিতে কোনো ভুল করেননি ক্রেগ ইয়ং। যাওয়ার আগে ৮২ বলে ৬টি চারে ৬৯ রান করেন তামিম। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ৫৬তম ওয়ানডে ফিফটি। ৯ ম্যাচ পর ফিফটি পেয়েছেন তিনি। তবে এই ম্যাচেও শুরুতে তাকে ফেরানোর সুযোগ ছিল। জশ লিটলের বলে দ্বিতীয় স্লিপে তার সহজ ক্যাচ ধরতে পারেননি অ্যান্ড্রু বলবার্নি।
তামিমের বিদায়ের পর মিরাজকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন মুশফিক। ৭৫ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনশ রানের দিকে। তবে ছন্দপতন শুরু হয় ২৬১ রানের মাথায় মুশফিক অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়লে। ৫ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন মুশফিক। চার রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৭ রান করা মিরাজও বিদায় নেন। এরপর ২৭১ রানের মাথায় হাসান, ২৭৩ রানে মোস্তাফিজ ও ২৭৪ রানে ফেরেন মৃত্যুঞ্জয়। শেষ ৪ উইকেটের তিনটিই দখল করেন মার্ক অ্যাডায়ার। ম্যাচে তার শিকার ৪ উইকেট। দুইটি করে উইকেট নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও জর্জ ডকরেল।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ এটি। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ জয়ে এগিয়ে রয়েছে টাইগাররা। এই ম্যাচে আঙুলে চোটের কারণে সাকিব আল হাসান। পেসার শরীফুল ইসলামকেও রাখা হয়নি দলে। এ দুজনের পরিবর্তে অভিষেক হয়েছে রনি তালুকদার ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর। এছাড়া দলে ফিরেছেন মোস্তাফিজুর রহমানও। আগের ম্যাচে বল হাতে খরুচে তাইজুল ইসলামকে বাদ দেয়া হয়েছে। আর আয়ারল্যান্ড দলে গ্রাহাম হিউমের বদলে খেলানো হচ্ছে ক্রেইগ ইয়াংকে।