শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা বাতিলের বিষয়ে করা ‘লিভ টু আপিল’ খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ সোমবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি বোরহান উদ্দিন ও বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আদেশের পর ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আপিল বিভাগ মামলা বাতিলে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। আজকের আদেশে আমরা সন্তুষ্ট নই। বিচারিক আদালতে আমরা এই মামলার শুনানিতে আইনি যুক্তিতর্ক তুলে ধরব।’
এর আগে গত ৩ এপ্রিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলা বাতিলের আবেদন হাইকোর্টে খারিজের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য ৮ মে দিন নির্ধারণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
গত বছরের ১৭ আগস্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলা বাতিলে ইউনূসের আবেদনে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ইউনূস ছাড়াও এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে মামলায় বিবাদী করা হয়।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। একই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দিয়েছিলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। সেই রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট।