শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নে এক নারী পোশাকশ্রমিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মিজান ঢালী (৪৫) সহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গতকাল শুক্রবার রাতে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এ ঘটনায় আজ শনিবার ভুক্তভোগী নারীর বাবা বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ভুক্তভোগী ওই নারী শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রুদ্রকর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. মিজান ঢালী (৪৫), মৃত জব্বার ফরাজীর ছেলে মো. জুয়েল ফরাজী (২৪), তোতা বয়াতীর ছেলে মো. সুমন বয়াতী (১৮), আব্দুর রব বয়াতীর ছেলে ইয়াসিন বয়াতী (৩৮), মৃত হাচেন সরদারের ছেলে শাহিন সরদার (৩০), খোকন সরদার (৩৩), রাসেল সরদার (২৬)।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের বাসিন্দা জুয়েল ফরাজী বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী নারীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। পোশাকশ্রমিক ওই নারী ছুটিতে বাড়িতে আসার সংবাদ পেয়ে গোপনে ওঁৎ পেতে ছিল অভিযুক্ত ধর্ষকরা। ওই দিন ভুক্তভোগী নারীর বান্ধবী বেড়াতে এসেছিল তার বাড়িতে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্ধবীসহ ওই নারী ঘর থেকে বের হলে তাদের মুখ চেপে ধরে অভিযুক্ত জুয়েল ফরাজীর বোন ফাতেমা বেগমের বাড়িতে নিয়ে যায় তাদের। পরে ওই বাড়ির একটি রুমে নিয়ে বৈদ্যুতিক আলোতে ভুক্তভোগীকে স্থানীয় মিজান ঢালী, জুয়েল, সুমন, ইয়াসিন, শাহীন, খোকন, রাসেলসহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জন মিলে ধর্ষণ করেন। এ সময় ভুক্তভোগী নারীর বান্ধবীকে পাশের রুমে আটকে রাখা হয়। এ ঘটনায় ওই নারী ও তার বান্ধবী ডাক চিৎকার করলে এলাকাবাসী এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরে ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘টয়লেটে যাওয়ার জন্য আমরা রাতে ঘর থেকে হই। এ সময় আমাকে ও আমার বান্ধবীকে প্রথমে মুখ চেপে ধরেছিল। তারপর ওরনা দিয়ে মুখ বেঁধে আমাদেরকে ঘরের ভেতর নিয়ে নির্যাতন করেছে। বৈদ্যুতিক আলোতে আমাকে ধর্ষণ করেছে এবং আমার বান্ধবীকে পাশের রুমে আটকিয়ে রেখেছিল। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
ভুক্তভোগী ওই নারীর বাবা বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার দুপুরে আমার মেয়েকে হুমকি দিয়েছিল তারা। রাতে আমার মেয়ে ও তার বান্ধবীকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। বাপ হয়ে মেয়ের এই দুরবস্থা দেখতে হয়েছে আমাকে। আমি সকলের কাছে সাহায্য চাই।’
রুদ্রকর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঢালী বলেন, ‘আমি শুনেছি ধর্ষণে একটি ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণ মামলায় পরিষদের একজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমি বিস্তারিত জানি না।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় উল্লেখিত আসামিদের ৭ জনকে ভোর পাঁচটার সময় গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে এসেছি। পরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।’