জনগণকে সাথে নিয়ে এদের ঐক্যবদ্ধভাবে পরাজিত করতে হবে : মির্জা ফখরুল

Slider রাজনীতি


আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের পরাজিত করতে হবে।

তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে গণতন্ত্রগামী মানুষকে হত্যা করে, গুম করে, খুন করে, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।

সোমবার মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক দল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান মে দিবস উপলক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশ্য মির্জা ফখরুল বলেন, আবার সেই পুরনো কায়দায় তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আবার মানুষ যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে যেন ক্ষমতা আসতে পারে এবং তারা যেন আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেজন্য এখন থেকে তারা হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে গোটা বাংলাদেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে তছনছ করে এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারই পুনরাবৃত্তিতে আবার একদল শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়, এই সরকার কৃষকবিরোধী সরকার, এই সরকার শ্রমিকবিরোধী সরকার, এই সরকার গণবিরোধী সরকার, জনগণের সাথে এ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই আজকে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিকের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবার হুমকি দেন অগ্নিসন্ত্রাস করতে দেয়া হবে না। অগ্নিসন্ত্রাস তো করেন আপনারা। নিজেরা অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি ওপর দোষ চাপান। বাসের মধ্যে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়ে বিএনপির ওপর দায় চাপান। রাজধানীর গুলিস্তানে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষকে হত্যা করেছেন।

ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের স্বার্থে, বাংলাদেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। এর প্রধান দাবি হচ্ছে, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার, শ্রমিকদের সরকার, কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে আগামী দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে কিনা, দেশের মানুষ মুক্ত থাকবে কি থাকবে না। এ লড়াই আমাদের মুক্তির লড়াই, আমাদের স্বাধীনতার লড়াই, এ লড়াই দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লড়াই, এ লড়াই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লড়াই।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেছে শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখ।

মির্জা আব্বাস বলেন, এ দেশের শ্রমিক জনতা খেটে খাওয়া মানুষ একত্র হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের আর নিস্তার নেই। ক্ষমতার জন্য বিএনপি জনগণের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। কোনো তদবিরে যায়নি। আপনারাই ক্ষমতায় থাকার জন্য বিদেশে বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিদেশী চররা এ দেশে অবস্থান করছে। তারা এদেশে চাকরি করছে। কিন্তু এদেশের যুবকরা চাকরি পায় না।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে শ্রমিকরা উপেক্ষিত, তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। পরিতাপের বিষয়, শ্রমিকরা কোনো মূল্য পায় না। এই সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ দেশের মানুষের কোনো অধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই। মানুষ তার ভোট দিতে পারে না। আজ দেশে বিনিয়োগ নেই। ডলার নেই। দেশের অর্থনীতিকে শেষ করে দিয়েছে এই সরকার। এই স্বৈরাচারী সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই। সামনে বেশি সময় নেই, এ দেশের মানুষকে ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

ড. মঈন খান বলেন, আজকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য কোনো কিছু করা হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের দুইটা সার কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এরা সার আমদানির নামে ভুয়া সার এনে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। শিক্ষক যেমন মানুষ গড়ার কারিগর, আমি তেমনি বলি শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। এই সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করব। এর মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আনব।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শ্রমিকের উন্নয়ন আর ফ্যাসিস্ট সরকার একসাথে যায় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যে হারে বেড়েছে, কোনো শ্রমিকের পক্ষে এ জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। এই অবৈধ সরকার ব্যাংক থেকে নিয়ে টাকা লুট করেছে। কিন্তু তা বহন করতে হচ্ছে এই শ্রমিককে।

সমাবেশ শেষে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে একটি র‌্যালি নয়া পল্টন থেকে শুরু হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *