বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলের নাজিরারটেক পয়েন্টে ভেসে আসা ট্রলার থেকে উদ্ধার হওয়া ১০ জনের লাশই পচে গেছে। তাই লাশের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।
আজ রোববার বিকেলে এ তথ্য জানান কক্সবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লাশগুলো যেহেতু একদম পচে-গলে গেছে, এ কারণে কোনো পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তবে আমরা ডিএনএ সংরক্ষণ করছি। তা পরীক্ষা করে লাশগুলো শনাক্ত করা হবে।’
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লাশগুলোর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। সেগুলো পচে-গলে গেছে। এগুলো উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
লাশবাহী ওই ট্রলার উপকূলে কীভাবে এসেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘লাশগুলো কোথা থেকে কীভাবে এসেছে, এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। এমনকি, কারও পরিচয়ও শনাক্ত করা যায়নি।’
ওসি আরও বলেন, ‘যেহেতু লাশ পচে গেছে, তাই কোনোভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সাগরে যাদের আত্মীয়-স্বজন নিখোঁজ আছে, এমন বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরাও এসেছিলেন শনাক্ত করতে, কিন্তু তারা কোনোভাবে শনাক্ত করতে পারেনি।’
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় ছেলেরা বঙ্গোপসাগরের গভীর এলাকায় ওই ট্রলারটি দেখতে পায়। তারা গতকাল শনিবার রাতে ট্রলারটি টেনে নাজিরারটেক পয়েন্টে নিয়ে আসেন। সেখানে এনে ট্রলারের ভেতর গলিত বেশ কয়েকটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলেদের কাছ থেকে খবর পেয়ে গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রলারে কয়েকজনের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। পরে আজ সকালে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লাশ উদ্ধার যায় পুলিশ। সকাল থেকে চেষ্টা করে লাশবাহী ট্রলারটি উপকূলের কাছে নিয়ে আসা হয়। দুপুরের পর থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার শুরু হয়।
ওসি বলেন, ১৫-১৬ দিন আগে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া পয়েন্টে ডাকাতি করতে গিয়ে একদল জলদস্যু জেলেদের হামলার শিকার হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হামলায় জলদস্যুরা মারা গেছেন বলে খবর বেরিয়েছিল। কিন্তু এতদিন দস্যুদের ওই ট্রলারের খোঁচ পাওয়া যায়নি। ওই জলদস্যুরা মহেশখালী চকরিয়া ও বাঁশখালীর বলে জানা গেছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, নাজিরারটেক পয়েন্টে ভেসে আসা ট্রলারটি জলদস্যুদের হতে পারে। তাই খবর পেয়ে নিখোঁজদের স্বজনরা সকাল থেকে নাজিরারটেকে এসে ভিড় করছেন।