আর দুদিন বাদেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। অন্য সব কেনাকাটার পর এখন মানুষের ভিড় বাড়ছে কাঁচাবাজারে। আর সেখানে গিয়ে মাংসের দাম দেখে অসন্তোষ ঝরছে ক্রেতাদের কণ্ঠে। ঈদের দিনে সেমাইয়ের পাশাপাশি ভালো খাবারের আয়োজন থাকে সব পরিবারেই, আর সেই খাবারের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান গরু কিংবা মুরগির মাংস। তবে গরুর মাংস আগের চেয়ে কেজিতে ৫০ টাকাও বেশি দেখা গেছে, বাড়তি ছিল মুরগির দামও।
রোজার মধ্যে দুদিন আগেও বাজারে গরুর মাংসের দাম ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকার মধ্যে ছিল। ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার মালিবাগ, মগবাজার ও মোহাম্মদপুরের কিছু বাজারে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। ঈদ উপলক্ষে হাটে গরুর দাম বাড়ায় মাংসের দামও বাড়াতে হয়েছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বেশি দেখে সুযোগ নিচ্ছে বিক্রেতারা। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি মাংস বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, যার ঘরে গরু আছে সে ঈদ উপলক্ষে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি ছাড়া বিক্রি করছে না। আমাদের কেনাই এখন ৭০০ টাকা কেজির বেশি হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আজকে আমরা গরুর মাংস বিক্রি করেছি ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
এই লাভ-ক্ষতির হিসাব কষাকষিতে পিষ্ট হওয়ার কথা জানান কারওয়ান বাজারে গরুর মাংস কিনতে আসা আহমেদ ফয়সাল। তিনি বলেন, আয়ের সঙ্গে তো দামের বিশাল ফারাক। সংসারই চালাই কষ্ট করে, ঈদেও যে একটু ভালো-মন্দ সাশ্রয়ে কিনব, সেই সুযোগ এই দেশে নাই।
দামের দিক থেকে গরুর মতোই অবস্থা ছাগলের। কাজীপাড়ার বাজারে খাসির মাংসের দাম দেখে নীলিমা আক্তারের মুখ মলিন। ঈদের দিনে মেয়ের জামাই আসবে বাড়িতে, তাই ভালো খাবারের আয়োজনে খাসির মাংস রাখতে চাইছিলেন তিনি। নীলিমা বলেন, রোজার মাঝেও এগারোশ টাকা কেজি নিলাম। এখন চাচ্ছে বারোশ টাকা কেজি। এটা তো অমানবিক!
নীলিমা বাধ্য হয়ে বারোশ টাকায় কিনতে পারলেও মালিবাগ, বাসাবোর বাজারে ক্রেতাদের খাসি কিনতে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে তেরোশ’ টাকা পর্যন্ত। তবে পাইকারি বাজারে খাসি ১ হাজার ১২০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বকরি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে।
এ ছাড়া বাজারভেদে হুট করেই ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালি, দেশিসহ সব ধরনের মুরগির। কাজীপাড়া, মালিবাগ, মহাখালী কাঁচাবাজারের মতো খুচরা বাজারগুলোতে এদিন ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে, লেয়ার ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায় আর সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৬০ থেকে ৩৭০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।