নতুন সূর্যের সোনালি আলোর ঝিলিক রমনার বটমূলে সবেমাত্র পড়তে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সুরের মূর্ছনায় শুরু হয় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষ ১৪৩০-কে স্বাগত জানিয়ে শুরুতেই পরিবেশন করা হয় আট মিনিটের ‘আহির ভৈরব সুরের সারেঙ্গি বাদন’। ছায়ানটের শিল্পীদের বাজনা মুহূর্তেই মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় রমনাজুড়ে।
আজ শুক্রবার বর্ষবরণের (পয়লা বৈশাখ) অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানটের শিল্পীদের সুর মুহূর্তেই ছড়িয়ে দেয় মুগ্ধতা। এরপর শুরু হয় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালাগান। এর ফাঁকে ফাঁকে চলছে শিল্পীদের একক কণ্ঠে গান ও আবৃত্তি। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি রেডিও চ্যানেলগুলো। পাশাপাশি ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হচ্ছে।
ছায়ানট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১০টি সম্মিলিত গান, ১১টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং সবশেষে জাতীয় সংগীতে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানমালা। আয়োজনটিতে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতি, মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, আত্মবোধন আর জাগরণের সুরবাণীর বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবারের মতো এবারও জোর নিরাপত্তায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে। তবে রমজান মাসের কারণে অন্যবারের চেয়ে মানুষের উপস্থিতি কম হলেও সকাল থেকে রমনার বটমূলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন বহু মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি আমলের বৈরী পরিবেশে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে ছায়ানটের যে যাত্রার সূচনা তা মূলত বাঙালির আপনসত্তাকে জাগিয়ে তুলবার, আপন সংস্কৃতিতে বাঁচাবার অধিকার ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করবার জন্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটাবার জন্য ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে শুরু হয় বাংলা বছরকে আবাহনের আয়োজন।