বাংলাদেশে বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিতর্কিত নির্বাচন। ওই নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করতে পারে নি। একই সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। কখনও কখনও গণমাধ্যম সরকারি চাপের মুখে পড়েছে। সরকার পরোক্ষভাবে হুমকি ধামকি এবং হয়রানিয় মাধ্যমে গণমাধ্যমকে সেন্সর করার চেষ্টা করেছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে। ২০১৪ সালের ওপর ভিত্তি করে ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকারের বড় সমস্যাগুলো হলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, অনলাইন ও মিডিয়াও ওপর বিধিনিষেধ, শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের অবস্থা নাজুক, শ্রমিক অধিকার। এতে তুলে ধরা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে র্যাবের হাতে সাত খুনের বহুল আলোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য মানবাধিকারের সমস্যার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও অন্যান্য অন্যায়, সরকারি পর্যায়ে ব্যাপক দুর্নীতি, খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার ও আটক, দুর্বল বিচারিক সক্ষমতা ও স্বাধীনতা, বিচারের আগে দীর্ঘ সময় আটক রাখা। কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকার লংঘন করেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে ও আন্তঃদলীয় সহিংসতা গুরুত্বর সমস্যা রয়ে গেছে। বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে আইনি ও অনানুষ্ঠানিক বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়েছে। নারীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। অল্প বয়েসে বিয়ে ও জোর করে বিয়ে দেয়ার ঘটনা সমস্যা হিসেবেই রয়ে গেছে। অর্থনৈতিক কারণে অথবা পাচারের শিকার অনেক শিশু কাজে নামতে বাধ্য হয়েছে। শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। বিষেষ করে সরকারি স্কুলগুলোতে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েছে তারা। আইন শৃংখলা প্রতি তোয়াক্কা না করার মানসিকতা রয়েছে ব্যক্তিবিশেষ ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে। এতে মানবাধিকারের লংঘন হচ্ছে, দায়মুক্তি থাকায়। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকারের রয়েছে সীমিত উদ্যোগ। দীর্ঘ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিডিয়া, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাগুলোর রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকার অথবা তার এজেন্টরা খেয়ালখুশিমতো অথবা বেআইনিভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে মোট কতজন মারা গেছেন সে হিসাব যেমন সরকার প্রকাশ করে নি তেমনি ওইসব ঘটনা তদন্তে কোন সমন্বিত উদ্যোগ নেয় নি। অথচ এর আগে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বলেছিলেন সরকার এক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা দেখাবে এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করানো হবে। মিডিয়া ও স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ২০১৪ পুরো বছরে কোন ঘটনায়ই ফৌজদারি শাস্তি দেয়া হয় নি। দু’একটি যে ঘটনায় সরকার অভিযোগ গঠন করেছে, তাদেরকে শুধু প্রশাসনিক শাস্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কমপক্ষে একটি উল্লেখ করার মতো মামলা বছর শেষেও ঝুলে রয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যকে দেয়া হয়েছে দায়মুক্তি। বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিস কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বছরের প্রথম আট মাসে র্যাব সহ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মোট ১১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অধিকার-এর মতে, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বছরের প্রথম নয় মাসে নিহত হয়েছেন ১৩৬ জন। অন্যদিকে ২০১৩ সালে মোট বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে ১৭৯টি। এসব মৃত্যু হয়েছে ঘেরাও, গ্রেপ্তার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অপারেশন চালানোর সময়। সরকার এগুলোকে বলেছে ‘ক্রসফায়ার’ ‘গানফাইটস’ অথবা ‘এনকাউন্টার কিলিংস’। গত বছরের ২৭শে এপিল প্রকাশ্য দিনের আলোতে র্যাব কর্মকর্তার নারায়ণগণ্ডের স্থানীয় সুপরিচিত এক রাজনীতিবিদ সহ সাত ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যা করে। এসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার পক্ষে কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। সরকার ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ওই কর্মকর্তাদের দায়ী করে তাদেরকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠায় ও গ্রেপ্তার করে। বছর শেষেও এর অনুসন্ধান চলছিল। রাজনৈতিক উত্তেজনা কমেছিল। কিন্তু ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর তার ইতি ঘটেনি। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হন ১২৪ জন। আহত হন ৬০৮৭ জন। গুম সম্পর্কে ওই প্রতিবেদনে বলা হয, গুম ও অপহরণ অব্যাহত ছিল। এর কিছু ঘটনার জন্য দায়ী নিরাপত্তা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী। অধিকারের মতে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হয়েছেন ৩৫ জন। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৪। একই সময়ে আইন ও সালিস কেন্দ্রের হিসাবে গুম হয়েছেন ৮০ জন। ১৫ই মে আইন ও সালিস কেন্দ্রের পরিচালক মোহাম্মদ নূর লিটন খানকে অফিস ছেড়ে যাওয়ার সময় অপহরণের চেষ্টা করে একদল মানুষ। র্যাবের নির্যাতনের বিষয়ে তিনি ডকুমেন্ট তৈরি করার অভিযোগে এর আগে তাকে র্যাব হুমকি দিয়েছিল। পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের কিছু লোক ফেব্রুয়ারি মাসে লক্ষীপুরের স্থানীয় বিএনপি নেতা ওমর ফারুককে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। ফারুকের পরিবারের দাবি, তাকে যে ট্রাকে তুলে নেয়া হয়েছে তাতে র্যাবের চিহ্ন ছিল। কিন্তু পুলিশ ও র্যাব দু’পক্ষই ওমর ফারুক কোথায় সে বিষয়ে জানেন না বলে জানায়। ফারুক নিখোঁজই রয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনে স্বাধীন বিচার বিভাগের কথা বলা আছে। কিন্তু সংবিধানের একটি ধারা মতে, নিম্ন আদালতে বিচারক নিয়োগের ক্ষমতা রয়ে গেছে নির্বাহী বিভাগের হাতে। সংবিধানের ১৬তম সংশোধনীর ফলে হাই কোটের বিচারকদের অভিসংশনের অধিকার পার্লামেন্টকে দেয়া হয় সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু নভেম্বর পর্যন্ত এ আইন বাস্তবায়নের লিখিত রূপ দেয়া হয় নি। এতে বলা হয়, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশী আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাকে অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়। ওই রিপোর্টে মতপ্রকাশ এবং গণমাধ্যম স্বাধীনতা নিয়ে বলা হয়, সংবিধানে মতপ্রকাশ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা রয়েছে। কিন্তু সরকার কখনও কখনও এসব অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কিছু বিধিনিষেধ ও সীমাবদ্ধতা ছিল। কিছু সাংবাদিক হয়রানী ও দমনপীড়নের শঙ্কায় সরকার প্রসঙ্গে তাদের রিপোর্ট সেলফ-সেন্সর করেছে। স্বতন্ত্র গণমাধ্যম সক্রিয় ছিল এবং বিস্তৃত পরিসরে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে। তবে, যেসব গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করেছে কখনও কখনও তারা নেতিবাচক সরাকরি চাপের মুখোমুখি হয়েছে। ৪ঠা আগস্ট মন্ত্রীপরিষদ একটি জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে। এতে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন সম্প্রচারে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এমন বিষয়বস্তু যা কর্মকর্তাদের মর্যাদাকে ছোট করে দেখানো হয়; বিদ্রোহ, নৈরাজ্য বা সহিংসতা প্রদর্শন করে এমন সংবাদ এবং জনস্বার্থে বা বিদেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে হানীকর কোন অনুষ্ঠান বা সংবাদ। এ নীতিমালার প্রেক্ষিতে জনগণের তরফ থেকে ব্যাপক সমালোচনা আসে। তবে নভেম্বর মাস পর্যন্ত আইনটি পাস হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। ১৯শে আগস্ট কর্তৃপক্ষ রবিউল্লাহ রবি নামের দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার বার্তা সম্পাদককে গ্রেপ্তার করে। একটি অনলাইন রিপোর্টের জন্য তাকে আইসিটিএ-এর অধীনে আটক করা হয়। তার ওই রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে এক পুলিশ কর্মকর্তার অন্যায় দায়মুক্তি পাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ইনকিলাব একটি নোটিশ ছাপিয়ে উল্লেখ করে যে তারা ‘যথেষ্ট সতর্কতা’ অবলম্বন করতে ব্যর্থ হয়েছে। রবি ও অপর দুজন সম্ভ্যাব্য ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং ১ কোটি টাকা জরিমানার মুখোমুখি হন। তবে বছরের শেষেও মামলাটির কোন সমাধা হয় নি। সরকার মালিকানাধীন একটি রেডিও ও একটি টিভি স্টেশন রয়েছে। আইন অনুযায়ী একমাত্র টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল বিটিভি থাকবে বলে বাধ্যবাধকতা দেয়া রয়েছে। দেশের জনসংখ্যার আনুমানিক ৬০ শতাংশের বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখার সুযোগ নেই। আর জরিপে উঠে এসেছে যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ টিভি থেকে তথ্য পেয়ে থাকে। বিটিভি সংসদসীয় সেশন এবং সরাকরি অনুষ্ঠানগুলো সম্প্রচার করে থাকে। কিন্তু বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি তেমনটা দেখানো হয় না। কেবল অপারেটররা সাধারণত সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরিচালিত হয়। সকল বেসরকারী চ্যানেলগুলোর সুনির্দিষ্ট সরকারী সংবাদ অনুষ্ঠান এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিমামূল্যে সম্প্রচার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোয়েন্দা বাহিনীগুলো সহ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে আঘাত, হয়রান এবং ভয়ভীতি দেখিয়েছে। অধিকারের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে এবং ১১৬ জনের ওপর হামলা এবং ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এএসকে’র তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রধম ছয় মাসে তিন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, সাত জনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বা হুমকি ধামকি দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ১২৩ সাংবাদিক রাজনৈতিক দলগুলো, সরকারী কর্মকর্তা বা অপরাধীদের দ্বারা হুমকি ধামকি বা হামলার শিকার হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়, সরকার পরোক্ষভাবে হুমকি ধামকি এবং হয়রানিয় মাধ্যমে গণমাধ্যমকে সেন্সর করার চেষ্টা করেছে। সাংবাদিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, একাধিক ক্ষেত্রে সরকারী কর্মকর্তারা বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলোকে বিরোধীদের কর্মকান্ড এবং বিবৃতি সম্প্রচার না করার কথা বলেছে। সুপরিচিত দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয় নি, কেননা তারা সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনামূলক প্রতিবেদন ছেপেছিল। ইন্টারনেট স্বাধীনতা প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়, জনসাধারণ এবং বিভিন্ন গ্রুপ সাধারনত ইন্টারনেটে মত প্রকাশ করে থাকে। যদিও কিছু অ্যাকটিভিস্ট বলেছেন, আইটিসিএ-এর অধীনে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় তারা তাদের অনলাইনে বক্তব্য দেয়া সীমিত করেছেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সভা করার স্বাধীনতা প্রসঙ্গে বলা হয়, সংবিধান সমাবেশ এবং সভা করার স্বাধীনতা দেয়। সরকার সাধারণতা এসব অধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিবাদ এবং অস্থিরতার সময়ে এমন ঘটেছে যেখানে সরকারী পদক্ষেপে সমাবেশ আয়োজনের স্বাধীনতাকে সীমিত করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ বা ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা বলপ্রয়োগ করে বিরোধীদের সমাবেশ ভেস্তে দিয়েছে। ৩রা মে. সংসদ ভবনের সামনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের প্রতিবাদে আয়োজিত মানব বন্ধন বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ওদিকে রিপোর্ট প্রকাশের আগে ব্রিফিং করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। তারপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী টমি মালিনস্কি। তার কাছে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল জানতে চান- এ রিপোর্টের জন্য সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরিকে ধন্যবাদ। আমি মুশফিকুল ফজল। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আমার প্রশ্ন। আপনি কি মনে করেন যে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক? বাংলাদেশ যেহেতু গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং জনগনের অধিকার নিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তার প্রশ্নের জবাবে সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী টম মালিনোস্কি বলেন, বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনি নিশ্চয়ই রিপোর্টটা পড়বেন। আমি এখন যেটা বলতে পারি তা হলো- ২০১৪ সালের ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপুর্তি থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সমাজের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছি আমরা। রাজনৈতিক অচলাবস্থার শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সহিংসতা বন্ধে আমরা তাদের আহ্বান জানিয়েছি। এ সহিংসতায় দৈনন্দিন জীবন ব্যহত হয়েছে। নিরপরাধ মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে সহিংসতা ব্যবহার নিয়ে আমরা অত্যন্ত শক্ত ভাষায় নিন্দা জানিয়েছি। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকা- আয়োজনের সুযোগ দেয়ার বিষয়ে সরকারের দায়িত্বের কথাও বলেছি। আইন শৃঙ্খলার প্রতি হুমকিগুলোর প্রতি যথাযথ মাত্রার শক্তি ব্যবহারের কথাও আমরা সরকারেরর কাছে তুলে ধরেছি।