জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের আলোচনায় এসেছে। আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বড় জমায়েত ঘটিয়ে এই আলোচনার জন্ম দেয় সংগঠনটি। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির আহ্বায়ক কবি, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক ফরহাদ মজহার ও সদস্যসচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদ।
২০১৩ সালে সংগঠনটির জন্ম হলেও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গত ১৬ মার্চ রাজধানীর বনানীর একটি অভিজাত হোটেল শেরাটনে নৈশভোজের আয়োজন করে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি। এতে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সাবেক আমলা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সংগঠনটি। এই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
গত ১৬ মার্চের নৈশভোজে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অংশ নিলেও রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়নের আজ সোমবারের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি তিনি। তবে, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াকে অংশ নিয়েছেন।
‘দারিদ্র ও ইনসাফ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরহাদ মজহার। এই অনুষ্ঠানে ২০টির মতো বাস ভর্তি করের নারী-পুরুষ আসতে দেখা যায়। তাদের বড় অংশ গার্মেন্টস শ্রমিক ও দিনমজুর।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘শুরুতে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে, তার আগে আমরা গণতন্ত্র ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে রাষ্ট্রই বেইনসাফি সেখানে পাঁচ বছর পর নির্বাচন করে দেশে দেশে ইনসাফ কায়েম হবে না, বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় এ ব্যবস্থায় ইনসাফ কায়েম হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সাংবাদিকদের মাছ-মাংসের স্বাধীনতা চাই- এ কথা লেখার স্বাধীনতা আছে? গণঅভ্যুত্থান হবেই- আমি বা শওকত না-ও দেখে যেতে পারি।’
ইনসাফ কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সব আইন মানলে গণঅভ্যুত্থান হবে না, সেটা ৬০ দশকে আমরা দেখেছি, শেখ মুজিবুর রহমানও রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য করে গণঅভ্যুত্থান করেছেন, আমরা ওনার থেকেই গণঅভ্যুত্থান শিখেছি। আপনারা কি ইনসাফ চান?’ তার এ প্রশ্নে উপস্থিত সবাই সমস্বরে চিৎকার করে বলেন ‘চাই’।
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘আমরা মনে করি গণঅভ্যুত্থান দরকার, আমরা সেই অভ্যুত্থান চাই।’
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘এই খুনি ভোট চোর সরকারের সঙ্গে আমরা নেই। যারা শেখ হাসিনা অধীনে নির্বাচন যাবে তারা দালাল, তাদেরকে আপনারা চিহ্নিত করবেন। এটা আমার দল গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের থেকে পরিষ্কার যে তারা এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।’ তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে স্বপ্ন তারা বুনছেন তা বাস্তবায়ন হবে না।
ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরে দেশ ও জাতির কল্যাণে মোনাজাত করা হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আরোগ্য কামনায় দোয়া করা হয়।
সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের পরিচালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন জানিপপ চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ, সাংবাদিক আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, ড. ফরহাত হোসেন খন্দকার, মাওলানা আশরাফুল হক।