বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে লঞ্চ থেকে মেঘনায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন শেখ রিফাত মাহমুদ (২৭) নামের এক যুবক। গত শুক্রবার শুভরাজ-৯ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তিনি নিখোঁজ হন বলে জানিয়েছে পরিবার।
নিখোঁজ ওই যুবক নগরীর কালীবাড়ি রোডের ফ্লোরা ভিউর বাসিন্দা ঠিকাদার শেখ আসলাম মাহমুদের ছেলে। তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেছেন।
লঞ্চের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১টা ১৬ মিনিটের দিকে লঞ্চের দ্বিতীয় তলার কেবিনের পাশে রেলিং ধরে নদীর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রিফাত। রাত ১টা ৩৩ মিনিটে রেলিংয়ের ওপর উঠে ঝাঁপ দিতে গিয়ে থেমে যান তিনি। এক পা রেলিংয়ের বাইরে দিয়ে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাশে আরও দুই যাত্রী থাকলেও তারা বিষয়টি খেয়াল করেননি। মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর নদীতে ঝাঁপ দেন ওই যুবক।
প্রথম ছবিতে লঞ্চের দ্বিতীয় তলার কেবিনের পাশে রেলিং ধরে নদীর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন রিফাত। দ্বিতীয় ছবিতে এক পা রেলিংয়ের বাইরে দিয়ে মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি।ছবি: সংগৃহীত
বাবা শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, আবুল খায়ের গ্রুপ অব কোম্পানিতে রিফাতের নিয়োগ হয়েছে। গত শনিবার সেখানে তার যোগদানের কথা ছিল। চাকরিতে যোগদান করতে শুক্রবার বরিশাল থেকে শুভরাজ-৯ লঞ্চে ঢাকা রওনা দেয় সে।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বলে বলছি না, রিফাত খুব ভালো ছেলে। নম্র, ভদ্র ও ধার্মিক ছিল। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত ও রোজা রাখত। তার মধ্যে কখনো অস্বাভাবিকতা দেখিনি। যাওয়ার সময় আমার ও তার মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছে। তার হাতে ও মায়ের কপালে চুমু দিয়েছে। যাওয়ার সময় আরও বলেছে, ঢাকা গিয়ে যদি টাকার প্রয়োজন হয় পাঠিয়ে দিও। আমিও তাকে বলেছি, তুমি জানালে পাঠিয়ে দেব। কেন, কি হলো আমি বুঝতে পারছি না।’
সাধের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করেছেন বলেও জানান শেখ আসলাম মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মেঘনা নদীতে ভাইয়ের সন্ধানে স্পিডবোট নিয়ে ঘুরছে ছোট ছেলে শেখ রাফসান মাহমুদ সংগ্রাম। নদীর বিভিন্ন স্থানে খোঁজা হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষদের কাছে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান চেয়েছে সংগ্রাম।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমিও ভিডিও দেখেছি। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা যে স্থান থেকে রিফাত ঝাঁপ দিয়েছে, সেই স্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া তার সন্ধান পেতে প্রত্যেকটি থানায় বার্তা দেওয়া হয়েছে।’