চলতি বছরে সিজনাল (মৌসুমি) ও স্পন্সর ভিসায় অভিবাসীদের কাজের অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) দিতে নিবন্ধন শুরু করেছে ইতালি। কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা নয়, শ্রমবাজারের চাহিদা বিবেচনায় অভিবাসী শ্রমিক নিয়োগ দিতে চায় দেশটির সরকার। গত ২৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই আবেদন প্রক্রিয়া।
ইতালির কৃষিমন্ত্রী ফ্রান্সেস্কো ললোব্রিজিদা বলেছেন, ইটালির ‘ফ্লো ডিক্রির’ অধীনে কত অভিবাসী শ্রমিক আনা উচিত, তা শ্রমবাজারের চাহিদা এবং তাদের সমাজে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে।
দেশটির রাই ট্রে টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক আনার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা ঘোষণা করতে চায় না ইতালি। আপনি যখন ইতালিতে শ্রম শক্তি নিয়ে আসবেন, এটা খেয়াল রাখতে হবে—এসব মানুষদের যাতে সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। যাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায় এবং একটি চুক্তির অধীনে ভালো বেতনের কাজ দেওয়া যায়।’
ইতালির কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে ইতালিতে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের অনেকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করেন। এমন চিন্তাকে নিন্দা জানাই। অনেক ইতালিয়ান ‘সিটিজেনশিপ ওয়েজ’ বা ‘নাগরিক বেতন’ নিয়ে যেসব চাকরিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখেন, সেসব চাকরিই শ্রমিকেরা করতে আসে। তাই আমি এই ধরনের একটি অসভ্য চিন্তাভাবনা প্রত্যাখ্যান করি।’
কৃষিমন্ত্রী ফ্রান্সেকো ললোব্রিজিদা জানান, ইতালিতে কৃষিখাতে হাজার হাজার শ্রমিকের সংকট রয়েছে। স্থানীয় শ্রমবাজার থেকে এই ঘাটতি পূরণ করা যাচ্ছে না। ইতালির কৃষিখাতে শ্রমিকের সংকটের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত।
দেশটির কৃষকদের সংগঠন কোলদিরেত্তি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের আশা সরকার কৃষিখাতের জন্য এক লাখ শ্রমিক আনার অনুমতি দেবে।
এদিকে, দেশটির শ্রমবাজারের ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে কর্মী আনার আগে ইতালিতে বর্তমানে অবস্থানরত অভিবাসীদের কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই চিন্তা করছে সরকার। বিদেশি কর্মী আনার বিষয়টি নির্ভর করবে দেশটিতে এই মুহূর্তে কত সংখ্যক দেশি-বিদেশি রয়েছেন, যারা সরকারের কাছ থেকে ন্যূনতম ভাতা পাচ্ছেন এবং দেশটির বিভিন্ন খাতে অবদান রাখতে পারবেন তার ওপর ভিত্তি করে। ইনফোমাইগ্র্যান্টস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশ থেকে কর্মী আনতে চাইবে, তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, দেশে এই খাতে কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।