রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে শত শত দোকান। ব্যবসায়ীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে পড়েছে এই এলাকার পরিবেশ। আগুনে সব পুঁজি হারিয়ে হতাশায় রাস্তায় বসে আক্ষেপ করছিলেন মোবারক মাহাজী নামের এক ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, ‘একটা দোকানের সব পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বঙ্গবাজারের পাশে এনেক্সকো টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আরেকটি দোকান ছিল। ওই দোকানের থেকে কিছু পণ্য বের করে নিয়ে আসতে পেরেছি। কিন্তু কীভাবে এই পণ্য বিক্রি করব? পানিতে ভিজে পণ্যগুলো নষ্ট হয়েছে।’
১৫ বছর যাবত এই মার্কেটে ব্যবসা করছেন বলে জানান মোবারক। এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তিনি কল্পনাও করেননি। কান্নায় জর্জরিত মোবারক বলেন, ‘দুই দোকানের জন্য ৪০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকার ব্যবসার জন্য বিনিযোগ করেছিলাম। এখন সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
রমজান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভাই ঈদ উপলক্ষে আমার দুইটি দোকানের জন্য ৪০ লাখ টাকার শাড়ি কিনেছিলাম। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা ভালো ছিল না। আশা করেছিলাম ১৫ রোজার পর থেকে বিক্রি জমে উঠবে। কিন্তু এখন তো আমার সব শেষ ভাই। কিছুই বাঁচল না। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হয়েছে। এখন কি করব কিছুই বুঝতেছি না।’
তাদের মতো অনেক ব্যবসায়ীই এই ভয়াবহ আগুনে সবকিছু হারিয়েছেন। অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও জানান, আগুনে কয়েকক শ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এক দোকানমালিক বলেন, ‘আমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। কীভাবে পরিবারের ভরণপোষণ করব জানি না।’
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একজন ইদ্রিস। তিনি বলেন, ‘আমার দোকানে ২০ লাখ টাকার নতুন জামাকাপাড় ছিল। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কী করব আমি …।’ এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান ইদ্রিস।
রিয়াদ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই। আগুন আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে।’
রাকিব নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি তার দোকান থেকে এক টুকরো কাপড়ও বের করতে পারেননি। আগুনের ভয়াবহতার কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য উদ্ধার করতে পারেননি। আশেপাশের অনেক দোকান থেকেও অনেক মানুষকে তাদের জিনিসপত্র বের করতে দেখা গেছে। তারা তাদের পণ্য রাস্তায় রেখেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের ৫০টি ইউনিট কাজ করছে।