আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ব্যালট পেপারে করার নির্বাচনে কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো সিদ্ধান্তে আগ্রহ নেই বিএনপির আগ্রহ নেই।
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে নাকি বলা হয়েছে আগামী নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে না, ব্যালটে ভোটগ্রহণ হবে। এই বিষয়গুলোতে আমাদের একটুও আগ্রহ নেই। কারণ আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, জাতির যে সংকট, সেই সংকট হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের। নির্বাচনকালীন সময়ে কোন ধরনের সরকার থাকবে সেটা হচ্ছে প্রধান সংকট। এই কারণেই আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, স্বাধীনতার মূল যে চেতনা ছিল, সেই চেতনা থেকে দেশ বহু দূরে সরে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একমত হয়েছি। আমরা একমত হয়ে যে কথাগুলো বলছি তা হচ্ছে- যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। তাদেরকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই নির্বাচন কমিশনে অধিনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য গণতন্ত্র রাষ্ট্রের জন্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম। যুদ্ধের যে চেতনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল সবগুলোকে আজকে ভূলণ্ঠিত করা হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছি, অতীতে যেমন শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, এখন আবার জনগণের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন চক্রান্ত করছে।’
তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণ কখনোই একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। আজকে বাংলাদেশ মানুষ যেই অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম শুরু করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, সেই সংগ্রামে সকল রাজনৈতিক দল, গঠন, ব্যক্তি তাদের অধিকার আদায়ের জন্য শরিক হবেন এবং তাদের অধিকার আদায় করবেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সারাদেশে একটি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। শুধু বিএনপির কথা বলছি না, সাধারণ কোনো দলের কথা বলছি না। আজকে সাধারণ মানুষও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি ধোয়া তুলে জনগণকে বোকা বানিয়ে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। আজকের দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদেশী পত্রিকাগুলোতেও একইভাবে সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে আরো অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আহমেদ আযম খান, ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মো: আবদুস সালাম, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
এছাড়া অন্যান্য দলের মধ্যে- জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ ও ফখরুল ইমাম, এলডিপির কর্নেল অলি আহমদ, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব, তানিয়া রব, ড. রেদোয়ান আহমেদ, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নূরুল আমিন বেপারী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এস এম শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) আজহারুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ এলডিপির আব্দুল গণি, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুর রকিব, এনডিপির ক্বারি আবু তাহের, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, গণঅধিকার পরিষদের মুহাম্মদ রাশেদ খান, গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির গরীবে নেওয়াজ, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নূরুল ইসলাম, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।