‘
মেঘ দেখে করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে’। বাংলাদেশের ক্রিকেট-আকাশ এখন মেঘমুক্ত। ক্রিকেট-সূর্যের হাসিতে উজ্জ্বল গোটা দেশ, গোটা জাতি। নানা বিভাজনে বিভক্ত এদেশের মানুষ যে কেবল ক্রিকেটেই এক ও অবিচ্ছিন্ন, যেন একই সুতোয় গাঁথা। বোঝাই যাবে না ধর্ম-বর্ণ-গোত্র বা রাজনৈতিক মতভেদে জর্জরিত এ দেশের মানুষ। বাংলাদেশ দলের সাফল্যের এ আভা এখন দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশীরাও উপভোগ করেছেন তাদের প্রিয় জন্মভূমির যুগান্তকারী এ জয়। একটি নয়, পরপর দুটি। কোন নাটকীয় বা কষ্টে নয়, একেবারে দাপটের সঙ্গে জয়। চাঁদ যত সুন্দরই হোক পূর্ণিমার সময় ছাড়া তাকে দেখতে দূরবীনের প্রয়োজন হয়। আর সূর্য মেঘে ঢাকা থাকলেও দূরবীনের দরকার হয় না। তেজই জানান দেয় তার অস্তিত্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন সূর্যের তেজে উদ্ভাসিত। অদম্য অপ্রতিরোধ্য এক বাংলাদেশ দুমড়ে মুচড়ে এগিয়ে চলেছে। যাদের সামনে একদা দাঁড়ানোই দায় ছিল তারাই এখন চিৎপটাং।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার পর চলতি বছর ওয়ানডেতে সবেচেয়ে সফল দলের গর্ব বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে ১১ ম্যাচের ৮টিতে জয় কুড়ালো টাইগাররা। চলতি বছর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭২.৭২। তালিকায় বাংলাদেশের আগে কেবল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। চলতি বছর ১৩ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া জয় দেখেছে ১১ বার। এতে অজিদের সাফল্যের হার ৯১.৬৬।
নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট করে বাংলাদেশ ২০১৩তে। অনেকে মনে করেছিল দেশের মাঠ বলে বাংলাদেশ ওদের স্পিনে কাবু করে ফেলেছে। এবার পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করার পর বলা হচ্ছিল যে ওরা এবার নতুন ও অনভিজ্ঞ দল নিয়ে এসেছিল বলে পারেনি। কিন্তু ভারত! ওরা তো দুর্বল কোন দল নিয়ে আসেনি। একেবারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা দলটিই এসেছে বাংলার বাঘকে মোকাবিলায়। শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই। বাংলার বাঘখ্যাত ওই প্রবাদ পুরুষের নামে প্রতিষ্ঠিত স্টেডিয়ামে বিশ্ব শুনলো বাঘের গর্জন। সুন্দরবনের কোলঘেষে বেড়ে ওঠা লিকলিকে এক তরুণের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হলো ভারত। বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ভারতীয় ‘সুপারমিডিয়া’ যেভাবে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক প্রচারণা চালিয়ে আসছিল তারা এখন খামোশ। রা’ নেই মুখে। বরং ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমেও বাংলাদেশ দলের প্রশংসা প্রচার পাচ্ছে।
গত বছরের শুরুতে কেমন ছিল বাংলাদেশ দলের চেহারা। আর এবার! আকাশ আর পাতাল ফারাক। হারে হারে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। খেলোয়াড়রা যেন খেলাই ভুলে গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের মতো দলের কাছেও হেরেছে। টি-২০তে হেরেছে হংকংয়ের কছেও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছে টানা নয় খেলা। জুনে দুর্বল ভারতের কাছেও ২-০তে হার। ভারতকে ১০৫ রানে অলআউট করেও বাংলাদেশ অলআউট হয় ৫৮ রানে। এরপর আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েও ৩-০তে পরাজয়। সেখানে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অলআউট হয় ৭০ রানে। হার মানে ১৭৭ রানের ব্যবধানে। ওই খেলায় তামিম একাই করেন ৩৭। অতিরিক্ত থেকে আসে ৫ রান। বাকি ১০ জনে করেন ২৮ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ রান করেন এনামুল। তৃতীয় খেলায় হারে ৯১ রানে। দলের এই করুণ অবস্থা সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ নামিয়ে ফেলেছিল অনেক। সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করছিলেন তারা খেলোয়াড়দের। এরপর বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ে দল বাংলাদেশ সফরে আসে। নভেম্বরের ওই সফরে অনেক আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। কিন্তু সব সংশয় দূর করে টানা পাঁচ খেলাতেই সুস্পষ্ট ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হারায় বাংলাদেশ। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলকে ঘরের মাঠে ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ দল যেন খানিকটা পানি পায় হালে। তারপরও এ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ নিয়ে সংশয়ের কমতি ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার মাটি পেসারদের ঘাঁটি। স্পিন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সেখানে কেমন করবে তা নিয়ে ভাবনার অন্ত ছিল না। শঙ্কা ছিল, বোলাররা কিছু করতে পারবেন না, ব্যাটসম্যানরাও পারবেন না। কিন্তু বিস্ময়ের শুরু সেখান থেকেই। তারুণ্যের উজ্জীবিত এক নতুন বাংলাদেশ দেখলো বিশ্ব। না, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নন বা লর্ডস কাঁপানো ওপেনার তামিম ইকবালও নন, বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিযান মুশফিকও নন, পর পর দুই খেলাতে শতরান হাঁকিয়ে নায়ক হয়ে গেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অথচ এর কিছু দিন আগে তার দলে থাকাটাই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দুর্দান্ত নিউজিল্যান্ডকেও ভড়কে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিল অদম্য ভারত। বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল না মানসিকভাবে। এর আগে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার হেঁয়ালিপূর্ণ আচরণ সবাইকে আরও উজ্জীবিত করে তোলে। মাঠেও তার প্রভাব দেখা যায়। কিন্তু সমানতালে লড়তে থাকা বাংলাদেশ দল সেদিন হার মানে আম্পায়ারদের বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তে। দুর্বল বাংলাদেশ দল মুখবুজে সব মেনে নেয়। কিন্তু মনে মনে পণ করেছিল প্রতিশোধের। ‘এক মাঘে তো আর শীত যায় না’। সোয়াশ কোটি ভারতীয় এবার দেখলো আহত বাঘের থাবায় কেমন জোর। বিশ্বক্রিকেটের যে মোড়ল বাংলাদেশকে একঘরে করতে ‘বিগ থ্রি’ থিওরি কার্যকর করেছে তাদের দিয়েই শুরু হলো আক্রমণ। বাংলাদেশ কারও দয়ায় নয়, নিজের যোগ্যতাতেই টিকে থাকতে চায় ক্রিকেট বিশ্বে।
বাংলাদেশের যে দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গো হারা হেরেছে সেই দলের ৭ জন নেই এখনকার দলে। ভারতের বিপক্ষে খেলা দলের নেই ৫ জন। কেউ বাদ পড়েছেন ইনজুরির কারণে, আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় সোহাগ গাজী আবার শৃঙ্খলা ভেঙে বাদ আল আমিন হোসেন। শামসুর রহমান নেই ফর্মের কারণে। এনামুল আর মাহমুদুল্লাহ নেই ইনজুরির কারণে। অথচ মাহমুদুল্লাহকেই যত ভয় ছিল অনেকের। কিন্তু এখন বাংলাদেশ যে আর একক কারও ওপর নির্ভরশীল দল নয় তার প্রমাণ আবারও দিলো।
বাংলাদেশের শক্তি এখন তারুণ্য। নতুনের শক্তিতেই বলীয়ান বাংলাদেশ দল। বয়স তাদের কম হতে পারে, অভিজ্ঞতার ঝুলি তাদের শূন্য হতে পারে কিন্তু মনের জোর তো অনেক। এবারও তামিম, মুশফিক, রুবেল, তাসকিন নয়, সব আলো কেড়ে নিলেন সবচেয়ে যিনি নতুন এবং সবচেয়ে যিনি ছোট সেই মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বয়সী যিনি তিনি হলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বয়সও সবে ৩১। আর কোন খেলোয়াড় নেই ২৮ বছরের চেয়ে বেশি। আরাফাত, সাকিব আর মুশফিকের বয়স ২৮। তামিমের ২৬। রুবেল ২৫, সৌম্য ২২, নাসির ২৩, মুস্তাফিজ ১৯, তাসকিন আর লিটন ২০। আর ভারতের অধিনায়কের বয়স ৩৩। ২৫ বছরে নিচে কেবল অক্ষর প্যাটেল। আর সবাই ২৬ বছরের বেশি বয়সী এবং বিশ্ব ক্রিকেটে উজ্জ্বল তারকা। কিন্তু ছোট ছোট তারার মেলায় বড় তারারা হারিয়ে গেল। এরই নাম পরিবর্তন। ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ দলকে বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করে আসছিল। সেই বাচ্চার কাছে এমন নাকানি চুবানি! লুকোবার জায়গা কোথায়!।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার পর চলতি বছর ওয়ানডেতে সবেচেয়ে সফল দলের গর্ব বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে ১১ ম্যাচের ৮টিতে জয় কুড়ালো টাইগাররা। চলতি বছর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭২.৭২। তালিকায় বাংলাদেশের আগে কেবল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। চলতি বছর ১৩ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া জয় দেখেছে ১১ বার। এতে অজিদের সাফল্যের হার ৯১.৬৬।
নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট করে বাংলাদেশ ২০১৩তে। অনেকে মনে করেছিল দেশের মাঠ বলে বাংলাদেশ ওদের স্পিনে কাবু করে ফেলেছে। এবার পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করার পর বলা হচ্ছিল যে ওরা এবার নতুন ও অনভিজ্ঞ দল নিয়ে এসেছিল বলে পারেনি। কিন্তু ভারত! ওরা তো দুর্বল কোন দল নিয়ে আসেনি। একেবারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা দলটিই এসেছে বাংলার বাঘকে মোকাবিলায়। শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই। বাংলার বাঘখ্যাত ওই প্রবাদ পুরুষের নামে প্রতিষ্ঠিত স্টেডিয়ামে বিশ্ব শুনলো বাঘের গর্জন। সুন্দরবনের কোলঘেষে বেড়ে ওঠা লিকলিকে এক তরুণের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হলো ভারত। বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ভারতীয় ‘সুপারমিডিয়া’ যেভাবে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক প্রচারণা চালিয়ে আসছিল তারা এখন খামোশ। রা’ নেই মুখে। বরং ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমেও বাংলাদেশ দলের প্রশংসা প্রচার পাচ্ছে।
গত বছরের শুরুতে কেমন ছিল বাংলাদেশ দলের চেহারা। আর এবার! আকাশ আর পাতাল ফারাক। হারে হারে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। খেলোয়াড়রা যেন খেলাই ভুলে গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের মতো দলের কাছেও হেরেছে। টি-২০তে হেরেছে হংকংয়ের কছেও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছে টানা নয় খেলা। জুনে দুর্বল ভারতের কাছেও ২-০তে হার। ভারতকে ১০৫ রানে অলআউট করেও বাংলাদেশ অলআউট হয় ৫৮ রানে। এরপর আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েও ৩-০তে পরাজয়। সেখানে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অলআউট হয় ৭০ রানে। হার মানে ১৭৭ রানের ব্যবধানে। ওই খেলায় তামিম একাই করেন ৩৭। অতিরিক্ত থেকে আসে ৫ রান। বাকি ১০ জনে করেন ২৮ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ রান করেন এনামুল। তৃতীয় খেলায় হারে ৯১ রানে। দলের এই করুণ অবস্থা সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ নামিয়ে ফেলেছিল অনেক। সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করছিলেন তারা খেলোয়াড়দের। এরপর বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ে দল বাংলাদেশ সফরে আসে। নভেম্বরের ওই সফরে অনেক আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। কিন্তু সব সংশয় দূর করে টানা পাঁচ খেলাতেই সুস্পষ্ট ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হারায় বাংলাদেশ। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলকে ঘরের মাঠে ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ দল যেন খানিকটা পানি পায় হালে। তারপরও এ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ নিয়ে সংশয়ের কমতি ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার মাটি পেসারদের ঘাঁটি। স্পিন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সেখানে কেমন করবে তা নিয়ে ভাবনার অন্ত ছিল না। শঙ্কা ছিল, বোলাররা কিছু করতে পারবেন না, ব্যাটসম্যানরাও পারবেন না। কিন্তু বিস্ময়ের শুরু সেখান থেকেই। তারুণ্যের উজ্জীবিত এক নতুন বাংলাদেশ দেখলো বিশ্ব। না, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নন বা লর্ডস কাঁপানো ওপেনার তামিম ইকবালও নন, বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিযান মুশফিকও নন, পর পর দুই খেলাতে শতরান হাঁকিয়ে নায়ক হয়ে গেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অথচ এর কিছু দিন আগে তার দলে থাকাটাই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দুর্দান্ত নিউজিল্যান্ডকেও ভড়কে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিল অদম্য ভারত। বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল না মানসিকভাবে। এর আগে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার হেঁয়ালিপূর্ণ আচরণ সবাইকে আরও উজ্জীবিত করে তোলে। মাঠেও তার প্রভাব দেখা যায়। কিন্তু সমানতালে লড়তে থাকা বাংলাদেশ দল সেদিন হার মানে আম্পায়ারদের বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তে। দুর্বল বাংলাদেশ দল মুখবুজে সব মেনে নেয়। কিন্তু মনে মনে পণ করেছিল প্রতিশোধের। ‘এক মাঘে তো আর শীত যায় না’। সোয়াশ কোটি ভারতীয় এবার দেখলো আহত বাঘের থাবায় কেমন জোর। বিশ্বক্রিকেটের যে মোড়ল বাংলাদেশকে একঘরে করতে ‘বিগ থ্রি’ থিওরি কার্যকর করেছে তাদের দিয়েই শুরু হলো আক্রমণ। বাংলাদেশ কারও দয়ায় নয়, নিজের যোগ্যতাতেই টিকে থাকতে চায় ক্রিকেট বিশ্বে।
বাংলাদেশের যে দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গো হারা হেরেছে সেই দলের ৭ জন নেই এখনকার দলে। ভারতের বিপক্ষে খেলা দলের নেই ৫ জন। কেউ বাদ পড়েছেন ইনজুরির কারণে, আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় সোহাগ গাজী আবার শৃঙ্খলা ভেঙে বাদ আল আমিন হোসেন। শামসুর রহমান নেই ফর্মের কারণে। এনামুল আর মাহমুদুল্লাহ নেই ইনজুরির কারণে। অথচ মাহমুদুল্লাহকেই যত ভয় ছিল অনেকের। কিন্তু এখন বাংলাদেশ যে আর একক কারও ওপর নির্ভরশীল দল নয় তার প্রমাণ আবারও দিলো।
বাংলাদেশের শক্তি এখন তারুণ্য। নতুনের শক্তিতেই বলীয়ান বাংলাদেশ দল। বয়স তাদের কম হতে পারে, অভিজ্ঞতার ঝুলি তাদের শূন্য হতে পারে কিন্তু মনের জোর তো অনেক। এবারও তামিম, মুশফিক, রুবেল, তাসকিন নয়, সব আলো কেড়ে নিলেন সবচেয়ে যিনি নতুন এবং সবচেয়ে যিনি ছোট সেই মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বয়সী যিনি তিনি হলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বয়সও সবে ৩১। আর কোন খেলোয়াড় নেই ২৮ বছরের চেয়ে বেশি। আরাফাত, সাকিব আর মুশফিকের বয়স ২৮। তামিমের ২৬। রুবেল ২৫, সৌম্য ২২, নাসির ২৩, মুস্তাফিজ ১৯, তাসকিন আর লিটন ২০। আর ভারতের অধিনায়কের বয়স ৩৩। ২৫ বছরে নিচে কেবল অক্ষর প্যাটেল। আর সবাই ২৬ বছরের বেশি বয়সী এবং বিশ্ব ক্রিকেটে উজ্জ্বল তারকা। কিন্তু ছোট ছোট তারার মেলায় বড় তারারা হারিয়ে গেল। এরই নাম পরিবর্তন। ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ দলকে বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করে আসছিল। সেই বাচ্চার কাছে এমন নাকানি চুবানি! লুকোবার জায়গা কোথায়!।
চলতি বছর বিভিন্ন দলের সাফল্য
দল ম্যাচ জয় হার পণ্ড সাফল্য %
অস্ট্রেলিয়া ১৩ ১১ ১ ১ ৯১.৬৬
বাংলাদেশ ১১ ৮ ৩ ০ ৭২.৭২
নিউজিল্যান্ড ২৩ ১৬ ৬ ১ ৭২.৭২
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩ ৯ ৪ ০ ৬৯.২৩
আয়ারল্যান্ড ১১ ৫ ৪ ২ ৫৫.৫৫
ভারত ১৪ ৭ ৬ ১ ৫৩.৮৪
শ্রীলঙ্কা ১৪ ৬ ৭ ১ ৪৬.১৫
ইংল্যান্ড ১৭ ৭ ৯ ১ ৪৩.৭৫
পাকিস্তান ১৫ ৬ ৮ ১ ৪২.৮৫
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২ ৪ ৮ ০ ৩৩.৩৩
আফগানিস্তান ১০ ৩ ৭ ০ ৩০.০০