পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সংযতের সঙ্গে রোজা পালন করে থাকেন। রোজার সেহরি ও ইফতারের নিয়তের মতোই গুরুত্বপূর্ণ তারাবির নামাজের নিয়ত, নিয়ম, দোয়া ও মোনাজাত সম্পর্কে জানা। এবার তাহলে এসব বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।
তারাবির নামাজের নিয়ত: মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য ভালো কোনো কাজের শুরুতে মনের মধ্যে ইচ্ছা পোষণ করা হয়, এটাকে নিয়ত বলা হয়। এ কারণে কেউ মুখে কোনো দোয়া উচ্চারণ না করলেও নিয়ত শুদ্ধ হয়। আবার কেউ চাইলে এভাবেও নিয়ত করতে পারেন—তারাবির দুই রাকাত নামাজ কেবলামুখি হয়ে (ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে জামাতের সঙ্গে) আল্লাহর জন্য পড়ছি, আল্লাহু আকবর। ইসলামিক স্কলারদের মতে এভাবেও নিয়ত করে নামাজ পড়া যায়। এছাড়া কেউ কেউ আরবিতেও পড়ে থাকেন।
আরবি: نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر.
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসালিয়া ল্লিলাহি তাআ’লা, রাকাআ’তাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুল্লিলাহি তাআ’লা। মুতাওয়াযজ্জিহান ইলা যিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।
এছাড়া তারাবির নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় হয় তবে বলতে হবে- ‘ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম’।
তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম: দুই রাকাত নামাজ পড়ে সালাম ফিরিয়ে ফের দুই রাকাত নামাজ পড়তে হয়। এভাবে ৪ রাকাত আদায় করে একটু বিশ্রাম নেয়া হয়। প্রতি চার রাকাত পরপর বিশ্রামের সময় তাসবিহ তাহলির পড়া, দোয়া-দরূদ ও জিকির আজকার করা ভালো। এরপর আবার দুই দুই রাকাত করে চার রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়।
তারাবি নামাজের দোয়া: চার রাকাত তারাবি আদায়ের পর ব্যাপক প্রচলিত একটি দোয়া আছে। দেশের প্রায় সব মসজিদে পড়া হয় দোয়াটি।
আরবি: سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
উচ্চারণ: ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’
তারাবির নামাজের মোনাজাত: কেউ প্রতি চার রাকাত পর পর মোনাজাত করেন, আবার কেউ পুরো নামাজ শেষ করে মোনাজাত করে থাকেন। তবে নামাজ শেষে বিতির আদায়ের পর মোনাজাত করাই ভালো।
আরবি: اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।