মাদারীপুরে রাজিব সরদার (২৫) নামের এক যুবককে হত্যা মামলায় ২৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আব্দুল হাই হাওলাদার (৫৫), আব্দুল হক হাওলাদার (৫৮), জহিরুল হাওলাদার (৩৬), রাসেল হাওলাদার (৩৮), রাজা হাওলাদার (৫০), কালু হাওলাদার (৫৫), সোবহান হাওলাদার (৫০) তুষার শরীফ (৩০), ইউসুপ হাওলাদার (৪০), আজিজুল হাওলাদার (৪৮), রহিম হাওলাদার (৫২), রেজাউল হাওলাদার (৫৪), শামিম হাওলাদার (৩০), আহাদ হাওলাদার (২৯), দলিলউদ্দিন হাওলাদার(৫২), অলিলউদ্দিন হাওলাদার (৫৫), জসিম হাওলাদার (৩৮), মনির হাওলাদার (৩৭), সুমন শরীফ (৩২), সাগর শরীফ (৩০, হাফিজুল কাজী (৩৮), কালু কাজী (৪২), আলাউদ্দিন কাজী (৩০)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন সেকেন হাওলাদার (৫০), উজ্জ্বল হাওলাদার (৪২), জামাল হাওলাদার (৪৮), রুবেল হাওলাদার (৩২), নুরুল আমিন হাওলাদার (৫৩), বাকিবিল্লা হাওলাদার (৫৮)।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্র জানায়, গত ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে মামা আলী হাওলাদারের নার্সারিতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন রাজিব সরদার। এসময় তিনি পৌর শহরের হরিকুমারিয়া এলাকায় আসলে পূর্বশত্রুতার জের ধরে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর যখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ও পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠালে পথিমধ্যে তিনি মারা যায়।
এ ঘটনার তিন দিন পর নিহতের মামা আলী হাওলাদার বাদী হয়ে জামাল হাওলাদার, রহিম হাওলাদার, আছাদ হাওলাদারসহ ৪৭ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তী সময়ে সদর মাদারীপুর সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব হোসেন তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরে বিচারিক আদালতে দীর্ঘ ১১ বছর যুক্তিতর্ক শেষে উপযুক্ত স্বাক্ষী প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ২৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এদিকে এ রায় ঘোষণার সময় ২২ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। মামার সঙ্গে বিরোধের জেরে তার ভাগনেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। আজ দীর্ঘ ১১ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই মামলার ২৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।’