মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে মাত্র ১২০ টাকা আবেদন ফি দিয়েই জামালপুরে পুলিশে চাকরি পেলেন ৮৭ জন চকরি প্রার্থী।
রোববার (১৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি প্রার্থীদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যারা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন তাদেরকে পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহামেদ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। আর যারা চাকরি পাননি তাদেরকে চলে যেতে হয়। এ সময় আনন্দ-বেদনার অশ্রুতে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ।
সদর উপজেলার টিকরাকান্দি গ্রামের সোমাইয়া আক্তার রিচি। বাবা হাফিজুল ইসলাম বিনা বেতনে স্থানীয় একটি স্কুলের নৈশপ্রহরী। পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য বান্ধবীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা ধার করে রিচি দাঁড়িয়েছিলেন জামালপুর পুলিশ লাইন্সে। পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা শোনে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন সংসারে আয় রোজগারের কেউ নেই। তাই চাকরিটা তার খুবই প্রয়োজন ছিল।
ভেলামারি গ্রামের মাহমুদ হাসান সোহানের মা-বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। ছোট বোন সোমাইয়াকে নিয়ে দুই ভাই-বোনের সংসার চলতো তার প্রাইভেট পড়ানোর টাকায়। বিনা পয়সায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সোহান আনন্দে আত্মহারা।
তারতাপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি আকরাম হোসেনের ছেলে রাশেদুল এর আগেও কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য মুখোমুখি হয়েছিলেন ৩ বার। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় এসে বাদ পড়ে যায়। তবে হতাশ হয়নি। কঠোর পরিশ্রম আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আবারও অংশ নেয়। অবশেষে সফলতা আসে।
নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন ২ হাজার ৯৫৪ জন। পরে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের লিখিত পরীক্ষা হয়। সবশেষ সেই পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হয় তাদের মধ্য থেকে ১৬৮ জন মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। আর সবশেষে নারী-পুরুষ মিলে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন ৮৭ জন।
পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আবেদনকারীদের ঘুষ কিংবা দালালদের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ দেয়া হয়নি। কোন ধরণের তদবির ছাড়াই শুধু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৩ জন নারী ও ৭৪ জনকে কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি একটি চ্যালেঞ্জ ও কঠিন কাজ।