রোজার আগে হঠাৎ করেই দেশের বাজারে দাম বাড়ল পেঁয়াজের। চিনি, ছোলাসহ অন্যসব ভোগ্যপণ্যও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মাংসের বাজারের উত্তাপ ছড়িয়েছে লেবু, বেগুন ও সবজিতে।
রোববার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বাজারগুলো পর্যালোচনা করে জানা যায়, বর্তমানে বাজার যেন এক শ্রেণির ক্রেতার কাছে নিত্যদিনের হতাশার গল্প, আর এক শ্রেণির কিছুই যায়-আসে না। রোজা সামনে রেখে তবু বাধ্য হয়ে তেল, ছোলা, ডালসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হচ্ছে ভোক্তার।
বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫০ টাকা ও সোনালি মুরগি পার করেছে ৩৫০ টাকা। অন্যদিকে গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা ও খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। সেই সঙ্গে বাড়ছে লেবু ও বেগুনের দাম। প্রকারভেদে লেবুর হালি ঠেকেছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় ও বেগুনের কেজি ৭০ টাকা।
এদিকে ইফতারিতে প্রয়োজনীয় ছোলার কেজি ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ১১০ টাকা, সয়াবিন তেলের লিটার ১৮৫ টাকা, প্রতি কেজি চিনির দাম ১১৫ টাকা থেকে ১২০ টাকা এবং খেজুরের কেজি ১৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
নাভিশ্বাস এক ক্রেতা বলেন, ‘জীবন বাঁচানোর তাগিদে মানুষ এখন বেশ কম করে পণ্য কিনছে। যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, এতে নিত্যপণ্য আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।’
অন্য বছর রোজার আগে বাজার থাকে জমজমাট। তবে এবার ক্রেতাসংখ্যা কম। অন্যদিকে দাম যা বাড়ার তা আগেই বেড়ে গেছে। দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাঁপিয়ে ওঠা ক্রেতাও এখন কম পরিমাণে পণ্য কিনছেন। এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা তেমন একটা কেনাকাটা করছেন না।
এদিকে হঠাৎ করে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায় ঠেকেছে। আর আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা পার করেছে। তবে দাম বাড়ার কারণ জানেন না বিক্রেতারা। এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, ‘দাম কেন বেড়েছে, জানি না। তবে এখন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বিধায় বেশি দামে বিক্রি করছি।’
অন্যদিকে নিত্যপণ্যের বাজারের এমন বাস্তবতায় অতিরিক্ত পণ্য না কেনার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রোববার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স-এর ষষ্ঠ সভা শেষে তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে। যে মুরগির উৎপাদন খরচ এত টাকা ও এত টাকায় বিক্রি করতে হবে। তাহলে ভোক্তা অধিকার সেটি ধরে বাজার তদারকি করবে।’
এ ছাড়া যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।