চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে দুটি মামলাতেই জামিন দিয়েছে গাজীপুর আদালত। শনিবার রাতে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। ওমরাহ শেষে দেশে ফেরার পর দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)।
এর আগে শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রাকিব সরকার পুলিশ বিভাগ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, আক্রমাত্মক, মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। একজন চলচ্চিত্র শিল্পীর কাছে থেকে এমন বক্তব্য আশা করি না। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাহিয়া মাহি মিথ্যা বলে মানুষের সহানুভূতি নেয়ার চেষ্টা করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ করেছেন তিনি। তারা পুলিশকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছেন। অথচ মাহি বা তার স্বামী জমিজমা সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেননি। আজ যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাদেরও আমি চিনি না। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি) তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ’জমি সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে তাদের প্রতিপক্ষের কাছ থেকে পুলিশ টাকা নিয়েছে বলে যে অভিযোগ করেছেন, এটা তারা কিভাবে বলতে পারেন? মামলাগুলোর সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত করা হবে।’
জিএমপি কমিশনার আরো বলেন, মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে এর আগে অস্ত্র, হত্যা ও ধর্ষণের তিনটি মামলা রয়েছে। ওই মামলার ঘটনা সত্য ছিল, কিন্তু কেউ স্বাক্ষী দেয়নি। তবে এখন মামলাগুলো পুনরায় তদন্ত ও স্বাক্ষী প্রমাণ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। তার আরেক ভাই গাজীপুরের পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি ও দখলের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। গাজীপুরবাসীর দাবিতে বিভিন্ন মহাসড়ক থেকে অননুমোদিত ও অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এতে সড়কে স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে।
উল্লেখ্য, জিএমপির বাসন থানায় দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরের দুটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে গ্রেফতার মাহিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুরের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। বিকেলে শুনানী শেষে আদালতের বিচারক উভয় মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মাহির স্বামী রাকিব সরকার ওমরাহ শেষে দেশে ফেরায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।