আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছেন জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে চিকিৎসা ভাতা হিসেবে এ টাকা নিয়েছিলেন বলে আদালত জানায়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জমির উদ্দিন সরকারের পক্ষে তার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া সোনালী ব্যাংকের হাইকোর্ট শাখায় এ টাকা জমা দেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে জরিমানা খাতে আমাদের টাকা জমা দেওয়ার জন্য বলা হলেও পরে তা সংশোধন করে অন্যান্য আদায় খাত করা হয়েছে। আমরা আজ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অন্যান্য আদায় খাতে ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা জমা দিয়েছি।’
এর আগে গত ৬ মার্চ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ জরিমানার আদেশ দেন।
এ বিষয়ে গতকাল সোমবার জমির উদ্দিন সরকারের আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ২০১০ সালে জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করে দুদক। মামলাগুলোয় অভিযোগ ছিল, জমির উদ্দিন সরকার ২০০৬ সালে স্পিকার থাকা অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসার জন্য ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা তুলে আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১২ সালে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় দুদক। পরে বিচারিক আদালত চার্জশিট আমলে নিলে তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে বিবিধ আবেদন করেন জমির উদ্দিন সরকার। পরে দুর্নীতির পাঁচটি মামলা বাতিল প্রশ্নে ২০১৬ সালে বিভক্ত রায় দেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আপিল বিভাগ শুনানি করে গত বছর রায় দেন। তাতে জমির উদ্দিন সরকারকে বিদেশে চিকিৎসা বাবদ নেওয়া টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ দেন। সম্প্রতি আপিল বিভাগের ওই রায় বিচারিক আদালতে আসলে বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার আদেশ দেন।
জমির উদ্দিন সরকারের আইনজীবী আরও বলেন, ‘আদেশ অনুযায়ী আমরা দু-এক দিনের আদালতে টাকা জমা দিয়ে দেব।’
জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে হওয়া দুদকের মামলার চার্জশিটে বলা হয়, জমির উদ্দিন সরকার ২০০৬ সালে স্পিকার হিসাবে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকার বিল নিজের নামে অনুমোদন করেন এবং ওই অর্থ তুলে নেন। দেশের প্রচলিত আইনে জাতীয় সংসদের স্পিকারের বিদেশে চিকিৎসার জন্য ব্যয় অনুমোদনের ক্ষমতা নেই। কিন্তু তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিল অনুমোদন করে অর্থ তুলে নেন।