
কার্যক্রম শুরুর পর কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। অথচ মন্ত্রণালয় বলে আসছিল দেশের সবচেয়ে সুন্দর, আকর্ষণীয় ও অত্যাধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল হবে এটি। এখন ঝুঁকি ঠেকানোর কারিগরি সমাধান খুঁজতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দ্বারস্থ হয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। দ্রুত এ বিষয়ে মতামত দিতে বুয়েটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ঘিরে শঙ্কার কথা জানা গেছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেনের একটি চিঠি থেকে। গত ১৫ ফেব্রয়ারি অনুষ্ঠিত বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এই বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।
সভার কার্য বিবরণীতে বলা হয়েছে- প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৭ কোটি টাকা। জানুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২৫ মে ২০১৭ সালে অনুমোদিত হয় এবং গত ১০ জুলাই ২০১৮ সালে ঠিকাদারের অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপিতে এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জিভূত বাস্তব অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী জানান, এরই মধ্যে প্রকল্পের বিভিন্ন আইটেম স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দি ইঞ্জিনিয়ার নামের কনসালটেন্ট ফার্ম এ প্রকল্পের সব ধরনের আইটেম ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। টার্মিনালে যে রুফশিট ব্যবহার করা হবে তা কার্ভ করলে তাতে ফাটল ধরার আশঙ্কা রয়েছে। প্রস্তাবিত রুফশিটের বিষয়ে বুয়েটের মতামত চাওয়া হয়েছে। রুফশিট অনুমোদন পেলে ঠিকাদার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প কাজ সম্পন্ন করবে বলেও সভায় আশ্বস্ত করেন বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী।
সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জানান, ঠিকাদারের মেথড অব স্টেটমেন্ট আরো ভালভাবে পর্যালোচনা করা উচিত। ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ সরাসরি ফ্যাক্টরি থেকে বাঁকানো রুফশিট আনবে, নাকি বাংলাদেশে এনে ডিজাইন অনুযায়ী বাঁকানো হবে সেটাও পর্যালোচনা করতে বলা হয়। টেন্ডারের মেথড দেখে তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রকল্প পরিচালক সভায় জানান, মেথড অব স্টেটমেন্ট অনুযায়ী ঠিকাদার প্রকল্প সাইটে রুফশিট ইকুইপমেন্ট নিয়ে আসবে এবং সেখানে ডিজাইন অনুযায়ী বাঁকাবে। আর বাঁকানোর সময় রুফশিটে ফাটল দেখা দিতে পারে। যে কারণে নির্মাণের পর টার্মিনাল ভবনটি ত্রুটিপুর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাতে রুফশিটের ফাটল দিয়ে বৃষ্টি পানি টার্মিনালের অভ্যন্তরে ঢুকবে। এজন্য রুফশিটের বিষয়ে অবশ্যই বুয়েটের মতামত লাগবে।
