গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে কোনো বিস্ফোরকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল টিমের প্রধান মেজর মো. কায়সার বারী। এ সময় ভবনটির বেসমেন্টে বিস্ফোরণ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল টিমের প্রধান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, বিস্ফোরণ হয়েছে বেসমেন্টে। বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্ফোরকের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিস্ফোরণে যে ক্ষয়ক্ষতি তাতে আমাদের মনে হয়েছে, এতে কোনো বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়নি। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম নিয়ে বেসমেন্টে প্রবেশ করতে পারিনি। ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সংস্থা থেকে বলেছে, বিল্ডিংটা ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার পর্যবেক্ষণও বলছে, বিল্ডিংয়ের অনেকগুলো বিম নষ্ট হয়েছে। কলামগুলোর অবস্থাও ভালো না। সেজন্য বিল্ডিংটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের ডিভাইস দিয়ে যতদূর অ্যাপ্রোচ করা সম্ভব হয়েছে তার মধ্যে আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। আমাদের যন্ত্র দ্বারা প্রাথমিকভাবে কোনো এক্সপ্লোসিভের (বিস্ফোরক) উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।’
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভবনটিকে স্টেবল (স্থিতিশীল বা ঝুঁকিহ্রাস) করার পর বেসমেন্টে যেতে পারলে আমরা আরও কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারব। সিটি করপোরেশন, বুয়েটসহ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মতামত নিয়ে ভবনটি স্টেবল করতে হবে।’
ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে মেজর কায়সার বলেন,‘স্টেবল করতে এক্সপার্ট ওপিনিয়ন (বিশেষজ্ঞ মত) প্রয়োজন। আমার টিমের মূল এক্সপার্টিজ (বিশেষ দক্ষতা) বোম্ব ডিসপোজাল (বোমা অপসারণ) নিয়ে। তবে স্টেবল করার বিষয়টি জটিল বলে মনে হয়েছে। বিম ও কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনটি সাত তলা। বিমের মাধ্যমে লোড কলামে ট্রান্সফার হচ্ছে না। এ কারণে আমরা এখনি বলতে পারছি না স্টেবল করতে কত সময় লাগবে।’
বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ ধরনের বিস্ফোরণ ঘটাতে বিপুল পরিমাণ এক্সপ্লোসিভের প্রয়োজন হতো। সে পরিমাণ এক্সপ্লোসিভ ব্যবহার করা হলে আমরা গন্ধ পেতাম। আমাদের ডিভাইস ও বিভিন্ন সংস্থার ডগ স্কোয়াডও এক্সপ্লোসিভের কোনো উপস্থিতি পায়নি।’
এদিকে বিস্ফোরণে ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। আহত হয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত ১৬ জনের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিকট শব্দে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।