গাজীপুর: কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত ৪ মার্চের পদযাত্রা কর্মসূচি সফল করতে গাজীপুর মহানগর বিএনপির যৌথ প্রস্তুতি সভায় হামলা করেছে বিরোধী গ্রুপ ।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা বিএপির দলীয় কর্যালয় প্রাঙ্গনে সভা চলাকালে প্রতিপক্ষের লোকজন লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় হামলাকারীরা সভাস্থলের ব্যানার ছিঁড়ে, চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে। সভার লোকজন হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়। পরে পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থল থেকে রাজু নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার জানান, কেন্দ্র ঘোষিত ৪ মার্চের পদযাত্রা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে মহানগর বিএনপির যৌথ প্রস্তুতি সভা চলছিল। বিএনপির প্রবীণ নেতা মীর হালিমুজ্জামান ননীর সভাপতিত্বে ও এডভোকেট মেহেদী হাসান এলিছের সঞ্চালনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম, মহানগর বিএনপি নেতা আহমদ আলী রুশদি, কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়া, মোঃ সুরুজ আহমেদ ,আ ক ম মোফাজ্জল হোসেন, সাইফুল ইসলাম টুটুল সহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তব্য চলাকালে প্রতিপক্ষের লোকজন রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুঠার ও লাঠিসোঠা নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা সভা স্থলের ব্যানার ফেষ্টুন ছিড়ে চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে।
এসময় সভার নেতাকর্মীরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়। পরে পুলিশের বাধায় সভা সমাপ্ত না করেই আমরা সভাস্থল ত্যাগ করি।
গাজীপুর সদর মেট্রে থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, বিএনপি দুই গ্রুপে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। এসময় ঘটনা স্থল থেকে এক জনকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য যে, গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বয়ক সোহরাব উদ্দিনের মৃত্যুর পর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মঞ্জুরুল করিম রনিকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়ার পর পূর্বের কমিটিগুলো ভেঙ্গে দিয়ে একসাথে আটটি সাংগঠনিক থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকেই উপেক্ষিত গ্রুপ প্রতিবাদ, পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আসছিলো। কমিটি সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে উপেক্ষিত গ্রুপের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মঞ্জুরুল করিম রনির কোনো প্রকার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। সে কখনো রাজনীতি করেনি। ছাত্রদল যুবদল তো দূরে থাক, কোনো একটা ওয়ার্ড কমিটির সদস্যও ছিলো বলে আমার জানা নেই। শুধু অধ্যাপক মান্নান স্যারের ছেলে হিসেবে এরকম একজন অগ্রহনযোগ্য অনভিজ্ঞ ফেরারি আসামীকে গাজীপুর মহানগরের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দিলে দলের এমন লেজে গোবরে অবস্থা হওয়াই স্বাভাবিক। তিনি উল্টা প্রশ্ন করে বলেন, বাপের সার্টিফিকেট দিয়ে কী ছেলেকে চাকুরি দেয়ার কোনো বিধান আছে? আর এটা তো চাকুরি না, এটা রাজনীতি। এখানে অনভিজ্ঞ লোককে দায়িত্ব দিলে ত্যাগী প্রকৃত বিএনপির লোক উপেক্ষিত হবেই। যারা রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের সময় কর্মীদের পাশে না থেকে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে থাকে তাদেরকে দিয়ে দলের কোনো উপকার হবে না। দলকে সংগঠিত করতে হলে অভিজ্ঞ ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদেও দায়িত্ব দিলে দলের উপকার হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।