ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুল্যুশনে বাংলাদেশের ভোটদানে বিরত থাকার ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্যাখায় ঢাকা বলছে, প্রস্তাবে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় টেকসই ও বাস্তবসম্মত পথরেখা না থাকায় ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ভোটের ব্যাখ্যায় মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানাই। আমাদের অঙ্গীকারে প্রতিজ্ঞ যে জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতি যেকোনো মূল্যে বহাল রাখা উচিত। এই বিষয়ে আমরা প্রস্তাবিত রেজুলেশনে ইউক্রেনে একটি ব্যাপক, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তির প্রচারের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব এবং সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানোর গুরুত্ব দেই।’
সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান সংঘাতের যেকোনো অর্থবহ এবং টেকসই সমাধানের জন্য অবশ্যই সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর মধ্যে নিবিড় কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা ও সংলাপ প্রয়োজন। আমাদের মতে এই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টটি রেজুলেশনে অনুপস্থিত ছিল। সে কারণে আমরা বিরত থাকতে বাধ্য ছিলাম।’
মুখপাত্র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও প্রতি শত্রুতা নয়’-এ নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি শান্তিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে। সার্বভৌম, সব রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি এবং সম্মানের নীতির ওপর ভিত্তি করে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি জাতিসংঘের সনদে উল্লিখিত নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি অবশ্যই সর্বজনীনভাবে সর্বত্র সবার জন্য, সব পরিস্থিতিতে কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই মেনে চলতে হবে। যদিও বর্তমান রেজুলেশনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য ইউক্রেনে একটি ব্যাপক, ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি খোঁজা।’
বৃহস্পতিবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবে ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।
প্রস্তাবটিতে ভোটদানে বিরত থাকা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশ হলো- বাংলাদেশ, চীন, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আলজেরিয়া, বলিভিয়া, ইরান, কিউবা, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ে।
এদিকে, যুদ্ধ বন্ধ করে রাশিয়াকে ইউক্রেন ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনীত রেজুলেশনে ভোটদানে বিরত থাকায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মস্কো।