আরও বিপজ্জনক পর্যায়ে যুদ্ধ?

Slider সারাবিশ্ব


উক্রেনে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ অভিযানের নামে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী দেশটিতে যে আগ্রাসন শুরু করে আজ শুক্রবার তার এক বছর পূর্তি। যুদ্ধ শুরুর পথম দিকে এটি বন্ধে পশ্চিমা দেশের বহু নেতাই পুতিনের সঙ্গে ফোনে-সাক্ষাতে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন, কিন্তু একটিও ফলপ্রসূ হয়নি এবং যুদ্ধ বন্ধে বর্তমানে এই আলোচনা প্রায় বন্ধ। উল্টো যুদ্ধের একবছর পর এই সংঘাত নতুন বিপজ্জনক পর্যায়ে।

গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আকস্মিক কিয়েভ সফরে দেশটিকে অব্যাহত সাহায্য করার অঙ্গীকার, অন্যদিকে পরের দিনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় এটা আপাতত স্পষ্ট- সহসাই রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটছে না।

একইসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার পুতিন জানান, রাশিয়া পারমাণবিক শক্তি জোরদার করার দিকে মনোযোগ বাড়ানো অব্যাহত রাখবে । যুদ্ধের বর্ষপূর্তির আগে এমন মন্তব্য সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা বাড়ছে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের।

রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের বহু শহর

পুতিনের সবশেষ ভাষণের প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিনের কথার মাধ্যমে আভাস পাওয়া যাচ্ছে তিনি সহসাই হাল ছাড়ছেন না বরং তিনি এই যুদ্ধ আরও জোরালোভাবে শুরু করবেন।

এছাড়া রাশিয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী এই নেতা বারবার দৃঢ় সংকল্পে বলে আসছেন, তার দেশ ইউক্রেনে তাদের লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত বিশেষ অভিযান বন্ধ করছে না। যুদ্ধের এক বছর হলেও রাশিয়া তাদের এই আগ্রাসনকে বিশেষ অভিযান বলে আখ্যা বলে চালিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়া দখলে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও প্রতিজ্ঞা করেছেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলে যাওয়া ক্রিমিয়াসহ তাদের সকল ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করে ছাড়বেন। এই নিয়ে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোসহ ন্যাটোর কাছ থেকে আধুনিক ট্যাংকসহ ভারী অস্ত্র প্রদানের বারবার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে অনেক দেশই জেলেনস্কির আহব্বানে সাড়া দিয়েছে। দেশটিকে আধুনিক ট্যাংক ও ড্রোন পাঠাচ্ছে। এতে করে যুদ্ধের মোড় আরও ঘুরবে বলে দাবি সমরবিদদের।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন

অন্যদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে চীন। দেশটি শিগগিরই অস্ত্রের চালান রাশিয়ায় সরবরাহ করতে পারে বলে দাবি পশ্চিমাদের। এই নিয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে নজিরবিহীন পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তাই ইউক্রেন ও রাশিয়া উভই দেশরই নতুন করে অস্ত্র নেওয়া বলে দিচ্ছে এই যুদ্ধ এখনে থামছে না বরং যুদ্ধ আরও ভয়াবহতার পথে।

এছাড়া গতকাল যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, দেশ দুইটির মধ্যে যুদ্ধ আরও এক বছর ধরে চলতে পারে। ইতোমধ্যে পূর্ব ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী।

এক বছরের যুদ্ধে উভয় দেশই উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি করতে না পারলেও দেশ দুইটির হাজার হাজার হাজার সেনা নিহত হয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের বহু শহর নরকে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।

অন্যদিকে এই যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে করে রুশ অর্থনীতে যে ধাক্কা লেগেছে তাই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান, সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *