বিদেশ যাওয়ার জন্য মেডিকেল চেকআপের উদ্দেশে আমার ভাতিজা ভোরে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ‘বোগদাদ’ বাসের বেপরোয়া গতিতে প্রাণ যায় আমার ভাতিজার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নিহত হাবিবুর রহমানের চাচা ওসমান গনি।
তিনি বলেন, ‘বোগদাদ বাসের বেপরোয়া গতিতে চলার কারণে প্রতিমাসেই কারো না কারো প্রাণ যাচ্ছে। আমরা বাসের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘোষেরহাট এলাকার মসজিদের সামনে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। আহত হন আরও একজন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদি দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলাইতলী গ্রামের হারুন বেপারীর ছেলে হাবিব বেপারী (২৪), একই উপজেলার বড়দিয়া আড়ং বাজার এলাকার বাসিন্দা মাহাবুব প্রধানীয়া (৫০) এবং চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের মৃত ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে নেছার হাওলাদার (৪০)।
নিহত হাবিবুর রহমান বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশে মেডিকেল চেকআপের জন্য ঢাকায় রওনা হন। এছাড়া নেছার আহমেদ হাওলাদার চাঁদপুর হরিনা ঘাট এলাকার মৎস্য আড়তে কাজ করেন এবং মাহবুব প্রদানীয়া একটি হোটেলে কর্মরত শ্রমিক।
নিহত মাহবুব প্রধানীয়ার ভাই রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আমার ভাই চাঁদপুর শহরের একটি হোটেলে কর্মরত শ্রমিক। ভোরে সে বাড়ি থেকে হোটেলে আসার উদ্দেশে বের হয়। পথিমধ্যে এ দুর্ঘটনার শিকার হয় সে। আমরা আমাদের ভাইয়ের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই চাই।’
জানা যায়, সকালে ঘোষেরহাট এলাকার মসজিদের সামনে একটি ট্রাক পার্কিং করে পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান ট্রাক চালক। ট্রাক পার্কিং অবস্থায় পিছন দিক থেকে একটি সিএনজিঅটোরিকশা ওভারটেক করতে গেলে অপরদিক থেকে আসা ‘বোগদাদ’ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজিতে থাকা তিন যাত্রী নিহত হন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ‘দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে এসেছি। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছ। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বাস-সিএনজিঅটোকিশা এবং ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময় আইনানুগ নেওয়া হবে।’