অপ্রয়োজনীয় কল এড়াতে জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ অটোকলার যুক্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই অটোকলার যুক্ত করে সেবা গ্রহীতার নাম পরিচয় তিনি কোথা থেকে ফোন করছেন তার সব তথ্য নিশ্চিত করে সেবা প্রধান করা হবে। সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ অপ্রয়োজনীয় কল বেশি আসায় কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলছেন জরুরি সেবার এই নম্বরে ভুক্তভোগীরা যেমন ফোন করে অভিযোগ করেন, তেমনি অপ্রয়োজনীয় কলও আসছে প্রচুর। অনেকে মজা করেও ফোন করছেন। আবার কেউ কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়েও বিভ্রান্ত করছেন। ৯৯৯-এ অপ্রয়োজনীয় ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে এমন কলের পরিমাণ মোট কলের অর্ধেকের বেশি বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অটোকলার যুক্ত করার পর ৯৯৯-এ বিরক্তিকর কল দিলেই তার বিরুদ্ধে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে বিরক্তিকর কলারের ছয় মাসের জেল বা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এমনকি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও বিচার করা হতে পারে।
তারা বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চালুর পর থেকে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জাতীয় এই সেবাটি। এই সেবার মতো এত তাড়াতাড়ি আর কোনো সেবা পেরেছে বলে মনে হয় না। ইতোমধ্যে সারা দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে ৯৯৯ সেবাটি। গত পাঁচ বছর দুই মাস বয়সে ৯৯৯-এ সরাসরি সমাধান যোগ্য কলের মধ্যে পুলিশ সার্ভিস দেয়া হয়েছে ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩৫টি, ফায়ার সার্ভিস এক লাখ ২৭ হাজার ১৭১টি এবং অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৬টি। সত্যিকারের বিপদগ্রস্তদের দ্রুত সেবা দেয়ার লক্ষ্যে অটোকলার চালু করা হলে অপ্রয়োজনীয়, মিথ্যা তথ্য বা বিরক্তিকর কল কমে যাবে। ৯৯৯ চালুর পর থেকে অপ্রয়োজনীয় কলের সংখ্যা বেশি ছিল। এখন তা অনেক কমে আসছে। ৯৯৯-এর কর্মী বাহিনী দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জনগণকে নির্বিঘ্নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সব মহানগর এলাকায় মোবাইল ডাটা টার্মিনাল (এমডিটি) ও থানা ডেসপাস সিস্টেম (টিডিএস) চালু করার ফলে সেবাটি আরো সহজ হয়েছে।
৯৯৯ এর কল তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সেবাটি চালুর পর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সেবা চেয়ে কল এসেছে চার কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬১টি। এর মধ্যে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮২টি কল সরাসরি সমাধানযোগ্য ছিল। এসব কলের বিপরীতে ৭৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ পুলিশি সেবা, ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ ফায়ার সার্ভিস সেবা এবং ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে- এক কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৬২২টির কলারকে সার্ভিস দেয়া হয়েছে। যা মোট কলের ৪১ দশমিক ২০ শতাংশ। পাশাপাশি ৯৯৯-এ অপ্রয়োজনে অনেকে ফোন করছে। গত পাঁচ বছরে ৯৯৯-এ দুই কোটি ৫৭ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৯টি অপ্রয়োজনীয় কল এসেছে। যা মোট কলের ৫৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে বিরক্তিকর কল ছিল ২৩ লাখ ১১ হাজার ৯৬৫টি।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ৯৯৯-এ মানুষের আস্থা বাড়ছে। বাড়ছে সেবার মানও। ট্রিপল নাইনে কল করার সাতে সাথে মিলছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবাসহ বিভিন্ন সেবা। কিছু অনাকাক্সিক্ষত কল আমরা পাচ্ছি। এতে ভুক্তভোগীদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ জন্য অপ্রয়োজনীয়, মিথ্যা বা বিরক্তিকর কল এড়াতে অটোকলার সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। এতে সত্যিকারের ভুক্তভোগীদের আরো দ্রুত সেবা দেয়া সম্ভব হবে।