সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী পাকিস্তানের চর। মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি জয় বাংলা শ্লোগান সরাতেন না, তিনি আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানাতেন না।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনায় ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ রাজনীতি উন্নয়ন অগ্রগতি ও আগামীর ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জিয়া যদি মুক্তিযোদ্ধা হতেন তাহলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাম, চেহারা, বৈশিষ্ঠ সব পরিবর্তন করে দিতেন না।
তিনি আরও বলেন, জিয়া ছিলেন একজন রাজাকার। তিনি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আবার ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সূচনা করেছিলেন।
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও এইম বাংলা যৌথভাবে খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ শেখ আবু নাসের ব্যাংকুয়েট হলে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, পরগাছা রাজনীতি বাংলাদেশে এখনও বিরাজমান। পরগাছা ও দালালদের দিয়ে দেশ চলে না। তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে, রাজনীতি থেকে বের করতে হবে। তাহলে মুক্তির যে পথ, বঙ্গবন্ধুর যে লক্ষ্য সেই চূড়ান্ত লক্ষ্যে আমরা যেতে পারবো। এটি হোক বাংলাদেশের মানুষের আগামী দিনের ভাবনা, আগামী দিনের কাজ।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। একটি সংঘাত সংঘর্ষ বাধানোর চেষ্টা করছে।সেটিকে প্রতিহত করতে হলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এ বার্তাটি পৌঁছাতে হবে যে বাংলাদেশে পরগাছা কারা, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কারা পরগাছা, কারা দালাল এবং কেন? সেটি মানুষকে উপলব্ধি করাতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যদি তা উপলব্ধি করে তাহলে ১৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন-অগ্রগতি, যে মর্যাদা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তাদের ব্যাপারকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
এছাড়া সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আতিকুল ইসলাম, খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার আলমগীর কবীর। সভাপতিত্ব করেন খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফারুক আহমেদ। সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন একাডেমীর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আলমগীর কবীর।
সেমিনারে বক্তৃতা করেন স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু, খুলনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, সাবেক কাউন্সিলর রুনু ইকবাল, আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল সিংহ রায়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মাহবুবার রহমান, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ, এইম বাংলা’র চেয়ারম্যান মল্লিক সুধাংশুসহ আরও অনেকে।
এছাড়া সেমিনারে রাজনৈতিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, নাগরিক নেতা ও সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।