সঞ্জয় দত্তঅস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বলিউডের অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত বন্দী আছেন পুনের ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে। সঞ্জয় ভক্তদের দারুণ এক সুখবরই দিলেন তাঁর স্ত্রী মান্যতা দত্ত। জানালেন, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পেতে পারেন এই ‘খলনায়ক’ তারকা। সম্প্রতি ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পর এমনটিই জানিয়েছেন মান্যতা।
গত সপ্তাহে ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান মান্যতা। সেখান থেকে ফেরার পর মান্যতা জানান, তিনি আশা করছেন এ বছরের শেষ নাগাদ বাড়ি ফিরতে পারবেন সঞ্জয়। এবারের বড়দিন উৎসব সঞ্জয় তাঁর যমজ সন্তান ইকরা ও শরণের সঙ্গে উদ্যাপন করতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্যতা। সম্প্রতি এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।এ প্রসঙ্গে মান্যতার ভাষ্য, ‘গত সপ্তাহে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করেছি। তেমন কোনো সমস্যা না হলে, এই ডিসেম্বরে আমার স্বামী বাড়ি ফিরতে পারবে। এটাই আমার প্রার্থনা।’
সঞ্জয় সহানুভূতি পেতে পারেন কি?
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, চলতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে সঞ্জয়ের সাজার মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু পরে সঞ্জয়ের পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের আগে সঞ্জয়ের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, ‘ওহ মাই গড’খ্যাত বলিউডের চলচ্চিত্রনির্মাতা উমেশ শুক্লা তাঁর পরবর্তী ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সঞ্জয়কে প্রস্তাব দিয়েছেন। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই ছবিটির শুটিং শুরু করবেন ৫৫ বছর বয়সী প্রভাবশালী এ তারকা অভিনেতা।সঞ্জয় দত্ত
গত ফেব্রুয়ারিতে খবর চাউর হয়, করণ জোহরের ‘শুদ্ধি’ ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সঞ্জয়কে। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সম্ভবত ‘শুদ্ধি’ই হবে সঞ্জয় অভিনীত প্রথম ছবি। সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চাইলে সঞ্জয়ের কাছের একটি সূত্র জানায়, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই খলচরিত্রে অভিনয় করতে চান না তিনি। উমেশ শুক্লা পরিচালিত ছবির মাধ্যমে নতুন করে যাত্রা শুরু করবেন সঞ্জয়। ছবিটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে।
অবশ্য ‘শুদ্ধি’ ছবির খলচরিত্রে সঞ্জয়কে প্রস্তাব দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন নির্মাতা করণ জোহর। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘এখন পর্যন্ত যত খলচরিত্র লেখা হয়েছে তার মধ্যে ‘‘শুদ্ধি’’ ছবির খলচরিত্রটিকে অন্যতম সেরা বলা যায়। আমরা কখনোই চরিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য সঞ্জয়কে প্রস্তাব দিইনি। চরিত্রটির অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাউকে নির্বাচন করতে হবে আমাদের।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে মুম্বাইয়ে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে ১২টি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল। ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২৫৭ জন নিহত হন। আর আহত হন ৭০০ জনের বেশি। ভয়াবহ ওই সহিংসতার এক মাস পর বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে সঞ্জয় দত্তের বাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ অবৈধ অস্ত্র খুঁজে পায়।
পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেলেও, বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ২০ বছর আগের মামলায় সাজা হয় সঞ্জয়ের। ২০১৩ সালের ২১ মার্চ সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। সঞ্জয় এই মামলায় আগে দেড় বছর সাজা খেটেছেন। এই হিসেবে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তাঁর কারাগারে বন্দী থাকার কথা।