বিশ্ব জুড়ে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান রোগে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৮ সালে ৯.৬ মিলিয়ন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এই রোগে। তাই ক্যান্সার সম্পর্কিত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার জন্য বিশ্ব জুড়ে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয় ৪ ফেব্রুয়ারি।
দেশে ক্যান্সার সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বের মতো আজ দেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২৩। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের ইতিহাস- দিনটি প্রথম শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। ২০০০ সালে প্যারিসে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনল ক্যান্সার কন্ট্রোল (ইউআইসিসি) এমন একটি সংস্থা যা প্রাথমিক পর্যায় ক্যান্সার শনাক্ত করতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে। সংস্থাটি ২০০৮ সালে প্রথম এই দিবস পালন শুরু করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আশঙ্কাজনক খবর হলো, দ্বিতীয় এ মরণব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক।
সারাবিশ্বে এই দিনটি ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল নামক একটি বেসরকারি সংস্থার নেতৃত্বে উদযাপন করা হয়, যা পূর্বে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল। এই সংস্থার সদর দপ্তর জেনেভায় অবস্থিত, যার ১৭০টিরও বেশি দেশে প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে।
দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো মারাত্মক ও প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার একটি বড় রোগ, যার সময়মতো চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ক্যান্সার ও এ রোগে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সচেতনতা ও শিক্ষার অভাব এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে বিবেচনা করেন তারা।
চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়। ক্যান্সারের লক্ষণগুলো নির্ভর করে ক্যান্সারটি কোথায়, এটি কতটা বড় এবং এটি কাছাকাছি কোনো অঙ্গ বা টিস্যুকে কতটা প্রভাবিত করে। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
তারা বলেন, ক্যান্সার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এই রোগ মানুষের শরীরের যে কোনো টিস্যুকে আক্রামণ করতে পারে। আর সঠিক সময় তা ধরা না পড়লে মৃত্যুও হতে পারে। এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি।