ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে সুবিধাজনক সুস্থির অবস্থানে রয়েছে সরকার। বিরোধী পক্ষের আন্দোলন বা সমালোচনা সরকারকে জোরালোভাবে স্পর্শ করবে সে পরিস্থিতি নেই।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের পর সরকারের মধ্যে আরও সুস্থির, পাশাপাশি দৃঢ়তাও তৈরি হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সরকারের এই দৃঢ়তার কথা জানা গেছে।
নরেন্দ্র মোদির সফরে বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দিক থেকেও সরকার লাভবান হয়েছে বলে নেতারা মনে করছেন।
তাদের মতে, বিএনপির রাজনীতির একটা বড় ভিত্তি হচ্ছে, কথায় কথায় ভারত বিরোধীতা। আর ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে ব্যাখা দিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ভারত বিরোধী বক্তব্যকে সামনে নিয়ে আসা।
দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি এই অপকৌশলকে সামনে নিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তবে মোদির সফরকে কেন্দ্র করে সেই বিরোধীতার অবস্থান থেকে সরাসরি উল্টোমুখি অবস্থান নিয়ে বিএনপি ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, ভারতের লোকসভায় ইন্দ্রিরা-মুজিব চুক্তি অনুমোদনে বিএনপির অভিনন্দন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে অভিনন্দন জানানো এটা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক দিক।
নরেন্দ্র মোদির সফরের পর ভারতের পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত মোদির কাছে খালেদার অভিযোগের প্রসঙ্গ ধরে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়া সাক্ষাৎ করে দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এবং প্রকারান্তরে সরকারকে সরাতে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যকে নরেন্দ্র মোদি প্রত্যাখান করে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থানকে যে ভারত সমর্থন করে না সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মোদির কাছে নালিশ করে খালেদা জিয়া পাত্তা পাননি। উল্টো মোদির প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন যার উত্তর খালেদার কাছে ছিল না।
আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের মতে, এতে একদিকে বিএনপি ক্ষমতার জন্য পরনির্ভর তৎপরতার অংশ হিসেবে ভারতের কাছে ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভারতমুখি বা ভারত প্রীতির অভিযোগ তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে অপকৌশল চালিয়েছে তার স্বরূপ পুরোপুরি উন্মোচিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি ও সমঝোতা রয়েছে সেটা আমাদের দেশের এই অঞ্চলকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মোদির সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী বলেন, নিজের দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশের কাছে নালিশ করা খালেদা জিয়ার পুরোনো অভ্যাস। এটা সম্পূর্ণ চিন্তা-ভাবনাহীন কথা বার্তা। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিভাবে এটা করতে পারেন। এটা করে তিনি দেশের জন্য তো নয়ই, এমনকি নিজের রাজনীতির জন্যও ভাল কিছু করেননি।
মোদির সফর পরবর্তী বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির আরেকজন সদস্য কাজী জাফরুল্লাহর বলেন, আমাদের সরকার তো ভাল সময় পার করছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফর করে গেলেন। বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগীতার পথ আরও প্রশস্ত হয়েছে। উন্নয়নের
যে কর্মসূচি নিয়ে আমাদের সরকার অগ্রসর হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সেই কর্মসূচির সফলতা কামনা করলেন। তার এই সফরকে বিএনপিও বিরোধীতা করেনি, অভিন্দন জানিয়েছে। চেষ্টা চালিয়ে তারা মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন।