গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের কারণে সরকার বিতর্কিত ইভিএমে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। তাই বিরোধীদলগুলোকে নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯১ এর মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা মেনে নেবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করবে।’
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সদস্য ফরম উন্মোচন এবং শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫১ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলে পর্যায়ক্রমে ৩১ বছর ক্ষমতায় ছিল। যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই স্বপ্ন তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে উন্নয়নের কথা বলে দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সামনে রোজায় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ তৈরি হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিনাভোটে নির্বাচন করে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের বুকে একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। আজ সমস্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দেশের মানুষ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য গণঅধিকার পরিষদ সকল বিরোধীদলকে নিয়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণে উত্তরাঞ্চলে বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও তারা তিস্তা চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভারতীয়রা আমাকে বলে তোমাদের সরকার বর্ডার কিলিং ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে কুটনৈতিক পর্যায়ে জোরালো তৎপরতা চালায় না। এনিয়ে সরকার ব্যর্থ, রাজনৈতিকবিদরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তার মানে এই নয় যে আজীবন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন ইভিএমের বিপক্ষে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে তখন সরকার ইভিএম কেনা থেকে পিছিয়ে এসেছে।’
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবো। অল্প সময়ের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদ দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে। দেশে ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু হলে গণঅধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্বে আগামীতে সরকার গঠন হবে। আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক হানিফ খান সজিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল মিয়া মসিউর রহমান, ইসাহাক সিদ্দিকী, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, মাহফুজার রহমান, গণঅধিকার পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব মাসুদ মোন্নাফ, ইব্রাহিম খোকনসহ অন্যরা। পরে তিনি সদস্য ফরম উন্মোচন এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।