দেশের কারাগারের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে লিখিতভাবে ক্ষমা চান তিনি।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এ বিষয়ে ওইদিন আইনজীবী জে আর খান রবিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ৭ জানুয়ারির মধ্যে এ নিয়োগ দিতে বলেছিলেন। কিন্তু এখনো শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করেছেন।
এর আগে ১৩ ডিসেম্বর কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করে হাইকোর্টকে জানায়, কারাগারগুলোতে ৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত এক দিন সময় বাড়িয়ে ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন।
২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি দেশে কারাবন্দিদের চিকিৎসার জন্য কারা হাসপাতালগুলোতে কত চিকিৎসক প্রয়োজন তা জানাতে কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন দিয়ে আদালতকে জানান, কারাগারের হাসপাতালগুলোতে মোট ২৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন। যদিও হাসপাতাল অনুসারে চিকিৎসক প্রয়োজন ১৪১ জন। পরে বাকি ১১৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর পরপর আরও চিকিৎসক নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই নিয়োগের পরে সেখানে মোট চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১২। কিন্তু এর মধ্যে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।
চিকিৎসক নিয়োগের পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী জেআর খান রবিন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।