আগামী ১৩ জানুয়ারি ঢাকার অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হবে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমাকে সফল করতে চলছে প্রস্তুতির কাজ। ইতোমধ্যে জেলাভিত্তিক খিত্তার তালিকাও সম্পন্ন হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি এবং ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যেই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমা মাঠে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নেবেন।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সরেজমিন ইজতেমা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদীর পূর্বপাড়ে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম কোনায় বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। কনকনে শীত উপেক্ষা করে তাবলীগ জামাতের সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবী মুসল্লিরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
ময়দানে প্রথম পর্বে খিত্তাভিত্তিক মুসল্লিদের অবস্থান
বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ডা. খান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন জানান, প্রথম পর্বের ইজতেমায় মুসল্লিরা যে সমস্ত খিত্তায় অবস্থান করবেন তা হলো –
গাজীপুর (খিত্তা-১), টঙ্গী (খিত্তা-২, ৩ ও ৪), ঢাকা (খিত্তা-৫ থেকে ১৮ ও ২১, ২২, ২৫, ২৭, ২৮, ৩০), রাজশাহী (খিত্তা-১৯), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (খিত্তা-২০), নাটোর (খিত্তা-২৩), নওগাঁ (খিত্তা-২৪), নড়াইল (খিত্তা-২৬), সিরাজগঞ্জ (খিত্তা-২৯), টাঙ্গাইল (খিত্তা-৩১), রংপুর (খিত্তা-৩২), গাইবান্ধা (খিত্তা-৩৩), লালমনিরহাট (খিত্তা-৩৪), মুন্সীগঞ্জ (খিত্তা-৩৫), যশোর (খিত্তা-৩৬), নীলফামারী (খিত্তা-৩৭), বগুড়া (খিত্তা-৩৮), জয়পুরহাট (খিত্তা-৩৯), নারায়ণগঞ্জ (খিত্তা-৪০), ফরিদপুর (খিত্তা-৪১), ভোলা (খিত্তা-৪২), নরসিংদী (খিত্তা-৪৩), সাতক্ষীরা (খিত্তা-৪৪), বাগেরহাট (খিত্তা-৪৫), কুষ্টিয়া (খিত্তা-৪৬), মেহেরপুর (খিত্তা-৪৭), চুয়াডাঙ্গা (খিত্তা-৪৮), ময়মনসিংহ (খিত্তা-৪৯, ৫১), শেরপুর (খিত্তা-৫০), জামালপুর (খিত্তা-৫২), গোপালগঞ্জ (খিত্তা-৫৩), কিশোরগঞ্জ (খিত্তা-৫৪), নেত্রকোনা (খিত্তা-৫৫), ঝালকাঠি (খিত্তা-৫৬), বান্দরবান (খিত্তা-৫৭), বরিশাল (খিত্তা-৫৮), পিরোজপুর (খিত্তা-৫৯), হবিগঞ্জ (খিত্তা-৬০), কক্সবাজার (খিত্তা-৬১), সিলেট (খিত্তা-৬২), সুনামগঞ্জ (খিত্তা-৬৩), ফেনী (খিত্তা-৬৪), নোয়াখালী (খিত্তা-৬৫), লক্ষ্মীপুর (খিত্তা-৬৬), চাঁদপুর (খিত্তা-৬৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (খিত্তা-৬৮), খুলনা (খিত্তা-৬৯), পটুয়াখালী (খিত্তা-৭০), বরগুনা (খিত্তা-৭১), চট্টগ্রাম (খিত্তা-৭৪), কুমিল্লা (খিত্তা-৭৫), তুরাগ নদের পশ্চিমপাড় কাঁচাবাজারে মৌলভীবাজার (খিত্তা-৭৬), রাজবাড়ী (খিত্তা-৭৭), মাদারীপুর (খিত্তা-৭৮), শরীয়তপুর (খিত্তা-৭৯), মানিকগঞ্জ (খিত্তা-৮০, সাফা টাওয়ার), রাঙ্গামাটি (খিত্তা-৮১), খাগড়াছড়ি (খিত্তা-৮২), দিনাজপুর (খিত্তা-৮৩), পাবনা (খিত্তা-৮৪), ঠাকুরগাঁও (খিত্তা-৮৫), ঝিনাইদহ (খিত্তা-৮৭, যমুনা প্লট), মাগুরা (খিত্তা-৮৮, যমুনা প্লট), কুড়িগ্রাম (খিত্তা-৮৯, কামারপাড়া বেড়িবাঁধ বঙ্গবন্ধু মাঠ), পঞ্চগড়ের (খিত্তা-৯০) কামারপাড়া হাইস্কুল মাঠ-বধির স্কুল ভবন) জন্য নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
এ ছাড়া ময়দানের চারপাশে ১১ ও ১২ নং খিত্তার কিছু অংশ, ৩২ ও ৩৭ নম্বর খিত্তার মাঝামাঝি ১২ নম্বর, ৭২, ৭৩, ৮৬ ও ৯১ নম্বর খিত্তাগুলো সংরক্ষিত হিসেবে রাখা হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের প্রথম পর্বের (জুবায়েরপন্থি) বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারী (মাওলানা সাদপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন।
ইজতেমার প্রথম পর্বের তথ্য সমন্বয়ক জহির ইবনে মুসলিম জানান, ২ মাস ধরে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি চলছে। এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অনেকে যোগ দিচ্ছেন। হাজারও মুসল্লির স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে চলছে ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ আলম জানান, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) পক্ষ থেকে প্রায় ৩ শতাধিক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। সিসিটিভির মাধ্যমে কন্ট্রোল রুম থেকে ইজতেমা মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
একেএম