নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত চাঞ্চল্যকর সেভেন মার্ডারের ঘটনায় একটি মামলার চার্জশিটের (অভিযোগপত্র) বিরুদ্ধে নারাজি আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। অভিযুক্ত সাবেক র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও এমএম রানাসহ ৩৫ আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে আদালত আগামী ৮ জুলাই আদেশ প্রদানের দিন ধার্য্য করেছেন।
সোমবার (৮ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সাত খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জনকে অপহরণ শেষে হত্যার ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ও গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ ও হত্যা মামলার বাদী ছিলেন চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। এ মামলায় আসামি অজ্ঞাত করা হয়েছিল।
গত ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দেওয়া দু’টি মামলার অভিন্ন চার্জশিটে ভারতের কলকাতায় গ্রেফতারকৃত সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাবের চাকরিচ্যুত তিনজন আলোচিত কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে বিউটির মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়াও।
গত ১১ মে সেলিনা ইসলাম বিউটি তার মামলার চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি প্রদান করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিউটির মামলার আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিট ও এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ায় নারাজি দেওয়া হয়েছে। সোমবার শুনানিতে আমরা নারাজির পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেছি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্তি পিপি ফজলুর রহমান বলেন, সাত খুনের ঘটনায় নিহত চন্দন সরকারের পরিবার চার্জশিটে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সেলিনা ইসলাম বিউটি নারাজি আবেদন করে থাকলে সেটা বাতিলের আবেদন করেছি। আগামী ৮ জুলাই আদালত আদেশ প্রদানের দিন ধার্য্য করেছেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।