সরকারের পদত্যাগ, দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে রাজধানীতে গণমিছিল করেছে বিএনপি। গণমিছিলকে কেন্দ্র করে লোকে লোকারণ্য ঢাকা শহর।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় গণমিছিলটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়। মিছিলের প্রথম অংশ কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় পৌঁছায়। যখন মগবাজারে মোড় মিছিলের প্রথম অংশ পৌঁছায় তখন অপর দিকে মিছিলের শেষ অংশ ছিল মতিঝিল নটরডেম পর্যন্ত। যা সন্ধ্যা ৬টায় মগবাজার গিয়ে শেষ হয়।
ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই অবস্থান নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে করে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল যাওয়ার রাস্তা এবং ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল চলাচলের সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা বাস্তাবায়ন এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে এ গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টা থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের গণমিছিলস্থলে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ এবং সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন তারা।
এছাড়া নেতাকর্মীদের মাথায় সাদা, লাল ও সবুজ ক্যাপ এবং জাতীয় পতাকা পরে গণমিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গণমিছিল ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসমাগম ঘটিয়ে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেয়া হয়।
এদিকে, গণমিছিল থেকে ১১ জানুয়ারি সারাদেশে বিভাগ ও মহানগরে সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগরী বিএনপির কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই ঘোষণা দেন।
বিএনপির গণমিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী।
এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরাফত আলী সপু, ডা. মো: রফিকুল ইসলাম, বেনজীর আহমেদ টিটো, মো: আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, পেশাজীবী পরিষদের পক্ষে অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, ড. শামসুল আলম সেলিম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ইউট্যাবের অধ্যাপক ড. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম রুবেল, খান মো: মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, কৃষিবিদ দিদারুল আলম, কেএম সানোয়ার আলম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী মো: আইয়ুব হোসেন, প্রকৌশলী মেহেদী হাসান সোহাগ, যুব জাগপার আমির হোসেন আমুসহ ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী ও রাজীব আহসান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, নাজমুল হাসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের মো: আব্দুর রহিম, কামাল উদ্দিন চৌধুরী টিটু, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, কাজী মো: আমীর খসরু, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, ড্যাবের অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো: মেহেদী হাসান, ডা. মো: ফখরুজ্জামানসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী- ২৪ ডিসেম্বর একযোগে সারা দেশে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে গণমিছিল কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু সেদিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় ঢাকায় এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে রংপুর মহানগরের কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।