আজ প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে আধুনিকতার নতুন এক অধ্যায়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যুক্ত হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির মেট্রোরেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম যাত্রী হয়ে মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী এই মেট্রোরেল চালাবেন মরিয়ম আফিজা। জনসাধারণের জন্য এই রেল চালু হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁওয়ের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ৫ টাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে।
প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী ফলকের একটি প্রতিকৃতি উন্মোচন করবেন। এরপর শুরু হবে সুধী সমাবেশ। প্রধানমন্ত্রী এই সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট ও নোট উন্মোচন করবেন।
সমাবেশস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরা উত্তর স্টেশনে আসবেন। সেখান থেকে মেট্রোরেল ছাড়বে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী সেখানে মূল ফলক পরিদর্শন এবং স্টেশন প্রাঙ্গণে বৃক্ষ রোপণ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী স্থায়ী কার্ড কিনে ভাড়া পরিশোধ করে প্ল্যাটফর্মে যাবেন। সেখানে অপেক্ষমান ট্রেনে সবুজ পতাকা নেড়ে ট্রেন চালুর সংকেত দেবেন। প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁওয়ে আসবেন।
১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথের আধুনিক ট্রেনে সবগুলো কোচই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। শুরুর দিকে পুরাপুরি অপারেশনে যাচ্ছে না মহানগরীর নতুন এ গণপরিবহন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, আপাতত সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা চালানো হবে।
মেট্রোরেলের উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে মোট ৯টি স্টেশন। এগুলো হলো- উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ী), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও। তবে শুরুতে কোনও স্টেশনে দাঁড়াবে না মেট্রো। দিয়াবাড়ী থেকে শুরু করে আগারগাঁওয়ে শেষ করবে। প্রতি ১০ মিনিট পর পর উভয়প্রান্ত থেকে চলাচল করবে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা চালানো হবে। পুরোদমে চালুর ব্যাপারে আমাদের প্রত্যাশা হলো তিন মাস পরে, সেটি ২৬ মার্চও হতে পারে। আমরা ওইদিন থেকে পূর্ণ অপারেশনে যাব। এই সময়ের মধ্যে মানুষ মেট্রোরেলের চড়ায় অভ্যস্ত হয়ে যাবে এটা আমাদের বিশ্বাস।
এম এ এন সিদ্দিক আরও বলেন, মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধের জন্য ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড থাকবে। এই কার্ড কিনতে লাগবে ২০০ টাকা। এরপর প্রয়োজনমতো টাকা দিয়ে (রিচার্জ) কার্ড ব্যবহার করা যাবে। এই কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে।
বৃহস্পতিবারই ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের লিংক দেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) জন্য নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না। স্টেশন থেকে এক যাত্রার এবং দীর্ঘমেয়াদি দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে।
এমআরটি-৬ প্রকল্প সরকারের অনুমোদন পায় ২০১২ সালে। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। পরে তা ধাপে ধাপে বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সবশেষ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ