সুপারস্টার সালমান খান। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ভক্তদের। একাধিক নারীর সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়ে বহুবারই খবরের শিরোনাম হয়েছেন। কিন্তু এখনো ধরে রেখেছেন বলিউডের ‘মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর’ তকমা! আজ তিনি পা রাখলেন ৫৮ বছরে। ১৯৬৫ সালের এই দিনে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন সালমান। অনেকের মনেই প্রশ্ন, ঠিক কজন এসেছেন তার জীবনে? অনেকে আবার বলে থাকেন, সালমানের প্রেম যেন ঠিক অতিথির মতো। তার প্রেমকাহিনির খবর জানাচ্ছেন- জাহিদ ভূঁইয়া
সংগীতা বিজলানি : বাবা সেলিম খানের বদৌলতে ছোটবেলা থেকেই গ্ল্যামার দুনিয়ার সঙ্গে ওঠা-বসা সালমানের। দ্বিতীয় বর্ষেই কলেজের পড়াশোনায় ইতি টেনে পা রেখেছিলেন সেলুলয়েডে। প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই অভিষেক ঘটান সম্পর্কের। প্রেমিকা ১৯৮০ সালের মিস ইন্ডিয়া সংগীতা বিজলানি। বয়সে সালমানের থেকে পাঁচ বছরের বড়। শোনা যায়, ছোট থেকেই বিউটি কনটেস্টের জয়ীদের প্রতি সেলিম খানপুত্রের দুর্বলতা ছিল। তাই সংগীতার সঙ্গে প্রেমপর্ব শুরু থেকেই জমে গিয়েছিল। অবশ্য খুব বেশি দিন টেকেনি এ সম্পর্ক। কয়েক বছরের মধ্যেই তৎকালীন ক্রিকেট তারকা আজহারউদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সংগীতা এবং ১৯৯৬ সালে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। সম্পর্কটা না থাকলেও সালমানের সঙ্গে বন্ধুত্বটা রয়েই গিয়েছে।
সোমি আলি : সোমি আলীর সঙ্গে সালমানের দেখা হয় যখন অভিনেত্রীর বয়স মাত্র নয়। আট বছর পর ১৯৯৩ সাল থেকে সম্পর্কে জড়ান তারা। গভীরভাবে একে অপরকে ভালোবাসলেও পরবর্তীকালে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। শোনা যায়, সালমানের অতিরিক্ত মদ্যপান ও খারাপ ব্যবহারের কারণেই সোমি এ সম্পর্ক ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সালমানের সঙ্গে দূরত্ব মন থেকে মেনে নিতে পারেননি সোমি। এর পরের বছরই বিদেশ চলে যান এ অভিনেত্রী।
ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন : ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ ছবির পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সালমানকে। সেই সময়ে ব্যাকগ্রাউন্ড একটু ভালো থাকলে সুযোগ পাওয়াটা সহজ ছিল। এখনকার মতো বড় বাবার ছেলে বলে সমালোচনার ঝড় সামলাতে হতো না। উপরি পাওনা ছিল সালমানের দুরন্ত ফিজিক ও হিরোইজম। মাধুরী, কারিশমার সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক তখন হিট দিয়েছেন সালমান। তাই ক্যারিয়ারের শীর্ষে ওঠার পথে পুরনো সম্পর্ক ভুলতে খুব বেশি সময় নেননি তিনি। ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’-এ একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কাছাকাছি আসেন ঐশ্বরিয়া ও সালমান। বাকিটা রূপকথার গল্পের মতো। অ্যাশ-সাল্লুর দুর্দান্ত রসায়ন ছাপ ফেলে ছবির পরতে পরতে। সুপারহিট হয় ছবিটি। কিন্তু পরিণতি পায়নি এই সম্পর্কটিও। দুজনই খবরের শিরোনামে চলে আসেন, যখন ঐশ্বরিয়া ব্রেকআপের সিদ্ধান্ত নেন। সম্পর্ক কতটা গভীর ছিল, কী কারণে ঐশ্বরিয়া সরে এলেন- এসব খুব স্পষ্ট নয়। কিন্তু সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন সালমান। শেষে বাবা সেলিম খান নিজে গিয়ে কথা বলেন নায়িকার সঙ্গে। কিন্তু ঐশ্বরিয়ারও ছিল ধনুক ভাঙা পণ। কোনোভাবেই এ মানুষটিকে নিজের জীবনে আর চাননি অভিনেত্রী। ২০০৭ সালে বচ্চনপুত্র অভিষেকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অ্যাশ।
ক্যাটরিনা কাইফ : ঐশ্বরিয়ার পর বলিউড-সুন্দরী নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন সালমান। ভেবেছিলেন ভারতীয় কোনো নায়িকা তার সঙ্গে পা মেলাতে পারবেন না। তাই বেছে নেন বিদেশি সুন্দরী ক্যাটরিনা কাইফকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও বিদেশেই বড় হয়েছেন ক্যাট। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যখন এলেন, তখন একবর্ণ হিন্দিও বলতে পারতেন না। ক্যাটের ডুবন্ত জাহাজের হাল ধরেন সালমান। শূন্য থেকে শীর্ষ নায়িকার খেতাব পান শুধু সালমানের জন্য। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে অবশ্য প্রেমে মজেন রণবীর কাপুরের সঙ্গে। কিন্তু ক্যাটের সেই প্রেম বেশিদিন টেকেনি। শেষ পর্যন্ত অভিনেতা ভিকি কৌশলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধেন অভিনেত্রী। এত কিছুর পরও ক্যাটরিনার জন্য বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সালমান। নিজের বড় বাজেটের একাধিক ছবিতে কাস্টও করছেন অভিনেত্রীকে।
লুলিয়া ভান্তুর : নিন্দুকেরা বলে থাকেন- যখন যাকে ভালো লাগে, তাকেই নিজের ছবির নায়িকা করে দেন এই সুপারস্টার। ‘কিক’ তারকা জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের ওপর ইমপ্রেসড হয়ে হঠাৎ করে ফ্ল্যাট গিফট করে বসলেন। তবে সবটাই সাময়িক। গভীরে যেতে হয়তো ভয় পান। কিন্তু সবশেষে তিনি তো সালমান খান। বোনের বিয়েতে রুমানিয়ান অভিনেত্রী লুলিয়া ভান্তুরকে গার্লফ্রেন্ড বলে পরিচয় দেন সালমান। কিন্তু খুব বেশিদিন সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারেননি কিংবা রাখেননি।
পূজা হেগড়ে : বর্তমানে সালমানের এক নতুন প্রেমের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বলিউডে। তাও কিনা নিজের অর্ধেক বয়সী অভিনেত্রীর সঙ্গে। এই সুপার স্টারের পরবর্তী ছবি ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’। এই ছবিতে সালমানের বিপরীতে অভিনয় করছেন দক্ষিণী অভিনেত্রী পূজা হেগড়ে। বিটাউনে জোর গুঞ্জন, ৩২ বছর বয়সী এ অভিনেত্রীর প্রেমে মজেছেন আজ ৫৮তে পা দেওয়া সালমান। তবে এ নিয়ে আপাতত কেউ মুখ খুলছেন না। সংগীতা থেকে পূজা- ভালোবাসার বাঁধনে ধরা দিতে সালমান হয়তো সব সময় রাজি! প্রেম নিয়ে ভক্তদের শাহরুখ খানের একটা ছবির ডায়ালগ শোনাতেই পারেন তিনি, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়, মেরা দোস্ত!’