লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপ-নির্বাচনে নৌকায় ভোট না দিলে হাত-পা ভেঙে দেশ থেকে বিতাড়িত করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ব্রজেন্দ্রনাথ (৪৩) নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগকারী ব্রজেন্দ্রনাথ উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামের দেবেশ্বর বর্মণের ছেলে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী নুরুল আমীন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে শুরু থেকে প্রচারণায় বাধা ও হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ করে আসছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম আরিফ।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ৮-৯টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামে যান চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। এ সময় পূর্ব সিন্দুর্না গ্রামের লোকজনকে ২৯ ডিসেম্বর নৌকায় ভোট দিতে বলেন। এতে ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় ওই গ্রামের ব্রজেন্দ্রনাথ ও তার স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। এ সময় শ্যামলের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়ে লোহার রড আর ডেগার উঁচিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, নৌকায় ভোট না দিলে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। এখানে থাকলে নৌকায় ভোট দিতে হবে।
এ ঘটনায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাসহ ন্যায়বিচার চেয়ে রোববার হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্রজেন্দ্রনাথ। এ অভিযোগে গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ ২২ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইতোপূর্বে এ গ্রামে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। দুই দিনের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ২২ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, আওয়ামী লীগের ছায়াতলে বাংলাদেশের হিন্দু-খ্রিস্টান আশ্রয় নিয়ে আছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম অভিযোগ দিয়েছেন সেটি আদৌ সত্য না। উপ-নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এখন তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।