মহান বিজয় দিবস শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
বাঙালি জাতির জন্য আজ গৌরবের দিন। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পেয়েছি একটি স্বাধীন ভূখণ্ড আর একটি লাল-সবুজের পতাকা। সেই বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে দিবসটির মহিমা প্রকাশ পাবে আজ।
একান্ন পেড়িয়ে বায়ান্নতে পা দেওয়া এই দেশটির স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের বিজয় পাওয়া পথে একাধিকবার কারাবরণ করতে হয়েছে তাকে। শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকেও সবাই নানাভাবে স্মরণ করবে, শ্রদ্ধা জানাবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকাসহ সারা দেশ উৎসবের সাজে সেজেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়কদ্বীপ ও মোড়ে আলোকসজ্জ্বাসহ জাতীয় পতাকা শোভা পাচ্ছে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাষিত ও বেসরকারি ভবনে। বিজয় দিবসকে বরণে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গতবছর বিজয় দিবসে সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ছিল আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। এবার বিজয়ের আয়োজনে যুক্ত হয়েছে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। সঙ্গে রয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাড়তি উত্তেজনা।
দিবসের কর্মসূচি
১৬ ডিসেম্বরের সকালের প্রথম ভাগে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুস্পস্তবক অর্পন করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকরা, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
দিনের অন্য কর্মসূচিতে সকাল সাড়ে দশটায় সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
বিজয় দিবসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সময় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৬টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল সাড়ে ৭ টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। যথাযথ মর্যাদায় সারাদেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের লক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।