গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ বলেছেন, ‘সংলাপে না গিয়ে পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী ভুল করছেন। সংঘাত থেকে সরে না আসলে তার বিপদ আসবে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) মালয়েশিয়ার কাছ থেকে শিখুন। মালয়েশিয়ার উন্নয়নের কর্মকার মাহাথীর মোহাম্মদ জামানত হারিয়েছেন।’
আজ শুক্রবার তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ঢাকা শহরে ৩৩ হাজার পুলিশ ও আনসার বাহিনী মাঠে নেমেছে। কালাচাঁদপুর থেকে শুরু করে মিরপুর কালশী পর্যন্ত প্রতিটি স্কুল মাঠে আনসার-পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। ছাত্রলীগের গুণ্ডারা হকারদের ধরে এনে লাঠি দিয়ে পথে-পথে দাঁড় করাতে চাইছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে রাজনৈতিক দল কী বক্তব্য দেবে, কোথায় মিটিং করবে এটা কি আপনি ঠিক করে দেবেন? আপনি কক্সবাজার থেকে শুরু করে যেকোনো মাঠে বক্তব্য দিতে পারবেন, আর অন্য রাজনৈতিক দল কোনো মাঠে মিটিং করতে পারবে না! আপনি বলেছিলেন, আপনারা মিটিং-মিছিল করে আসেন আমি চা খাইয়ে দেব। কিন্তু চায়ের বদলে এখন জেলখানায় পাঠাচ্ছেন, গুলি করছেন। কায়দাকলে বাকশালের দিকে যাবেন না। বাকশাল কখনো আমাদের আদর্শ হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কালকে আমাকে অন্তত ১০ জন (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য) ফোন করে বলেছে—‘স্যার আমাকে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে ডিউটি দিয়েছে, আমি কি করব?’ আমি বলেছি, তোমাদের ডিউটি দিয়েছে তা করো। তারা বলে ‘তারপর কী হবে আমার? জনগণ জড়ো হলে তো আমাকে…।’ আমি বলেছি, তুমি বাড়াবাড়ি করো না। একাধিক ব্যক্তি আমাকে ফোন করে এগুলো বলেছে।’
বঙ্গবন্ধুর বাকশাল গঠন প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘১৩ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধু আমাকে ডেকে পাঠালেন, তাকে বলেছিলাম আপনি এই কাজ করবেন না। প্রধানমন্ত্রীকে বলছি…আপনি পিতার কাছ থেকে শিখুন। তা না হলে আজকে বিএনপির ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, যদি সিদ্ধান্ত হয় তাহলে আমিও তাদেরকে দেখতে যাব। নয়াপল্টনে যাব, আমাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার অধিকার আপনার নেই।’
এ সময় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং হুমকি দিচ্ছেন তার হুমকির পর ছাত্রলীগ যুবলীগ তাণ্ডব চালাবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সমাবেশের স্থান নয়াপল্টনকে বেআইনি তকমা দিয়ে ক্র্যাকডাউনে নেমেছে পুলিশ।’
আর গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘তাদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাউয়ূম।