বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ শনিবার। ভোরের আলো ফুটতেই ধীরে ধীরে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। গত রাতে মাঠে নেতাকর্মী গান–বাজনা-মিছিল করেই কাটিয়ে দেন সমাবেশস্থলে। গণসমাবেশ সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব বিএনপি নেতা জসীম উদ্দিন বলেন, ‘সবকিছু ভালোভাবেই হচ্ছে। সমাবেশ জনসমুদ্র হবে।’
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী বলেন, ‘রাতের এ দৃশ্য মনে করিয়ে দেয়, বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ ভালো নেই। মানুষের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও সমাবেশে এসেছেন।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, টাউন হল মাঠ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিএনপি নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে মিউজিক স্টিস্টেম বাজছে। গান করছেন জাসাস শিল্পীরা। নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতেই এই কৌশল বলে জানিয়েছে বিএনপি। অনেকে স্মার্টফোনে লাইভ করছেন, সেলফি তুলছেন। মাথায় ক্যাপ, বুকে নেতাকর্মীদের ছবি সংবলিত ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ লেখা টিশার্ট পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মাঠের উত্তর পশ্চিম কোনায় তৈরি দক্ষিণমুখী মঞ্চ থেকে পশ্চিম-দক্ষিণ প্রান্তে নেতাকর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসায় মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়েছে। পূর্ব প্রান্তে আছে পানির ব্যবস্থা।
এদিকে ডেকোরেশনের দায়িত্বে থাকা সেলিম জানান, সব কাজ শেষ শুধু চেয়ার বিছানো বাকি। সমাবেশের মঞ্চ ২ শতাধিক নেতাকর্মী ধারণ করতে পারবে।
এদিকে গণসমাবেশ উপলক্ষে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপির চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব মেডিকেল ক্যাম্প খুলেছে। টাউন হল মাঠের মুক্তমঞ্চে বসে আছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু। তাকে নিয়ে দলটির কর্মীরা সেলফি তুলছেন। টাউন হল মাঠের পূর্ব পাশে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও ধানের শীষ প্রতীকের কোটপিন বিক্রি করছেন আলী আকবর ও ফরিদ মিয়া নামের দুই বিক্রেতা। ২০–৪০ টাকায় ওই কোটপিন বিক্রি হচ্ছে। মূল মঞ্চের কাছে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য স্টেজ করছেন বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. খোকন বলেন, ‘বেলা তিনটায় এসে টাউন হল মাঠে বসে আছি। এখন ব্যাগ মাথার নিচে দিয়ে ঘুমাব।’ ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। এই দাবিতে সমাবেশে এসে বসে আছি।’
কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু জানান, তিনি ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় ৭৮টি ফ্ল্যাটে ও আরও কিছু বাড়িতে ২৫ হাজার মানুষের থাকা-খাওয়ার আয়োজন করেছেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম নাঙ্গলকোট, চান্দিনা, মুরাদনগর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন।