লন্ডন: বাংলাদেশ যে শুধু দুর্নীতি, দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রাজনৈতিক অস্থিরতার দেশ নয়, এই দেশটিও যে পৃথিবীর অন্যতম একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরও দেশ, মাত্র ১০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র তা জানান দিয়েছে বিশ্ববাসীকে।
এ তথ্যচিত্রটি দেখিয়ে আমরা এখন পর্যটকদের প্রতি আহবান জানাতে পারি, ‘হে পৃথিবী, দেখে যাও আমার দেশ!’
১০ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর দুটো আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এমনই মন্তব্য করেন।
বুধবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের অক্সফোর্ড হাউসে খ্যাতিমান তথ্যচিত্র নির্মাতা মঈনুল হোসেন মুকুলের ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ তথ্যচিত্রটির দুটো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘জাগরেব ট্যুর ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘পোলান্ড আর্ট অ্যান্ড ট্যুর অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ ও লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে নব নিযুক্ত প্রেসমিনিস্টার সাংবাদিক নাদিম কাদির।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কবি শামীম আজাদ, ব্রিটেনের মূলধারার তথ্যচিত্র নির্মাতা রুহুল আমিন, সাংবাদিক সৈয়দ আনাস পাশা, নাট্যকার ফজলুল কবীর তুহিন, সাংবাদিক উর্মি মাজহার, আ স ম সালেহ ও রাজনীতিক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক বুলবুল হাসান ও সংস্কৃতিকর্মী খাদিজা রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বেঙ্গল আর্টস ফোরামের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর রানা।
অনুষ্ঠানে জাগরেব ট্যুর ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ও পোলান্ড আর্ট অ্যান্ড ট্যুর অ্যাওয়ার্ড ফেস্টিভ্যাল আয়োজক কমিটির প্রতিনিধি ও ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ তথ্যচিত্রে মূল চরিত্রে অভিনয়কারী ভিকি’র ভিডিও ম্যাসেজও দেখানো হয়।
অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে মইনুল হোসেন মুকুলের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, মুকুল একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সেলুলয়েড কবি। একজন কবির পক্ষেই সম্ভব নিজের দেশকে ইতিবাচকভাবে ফুটিয়ে তোলা। প্রবাসী বাংলাদেশি নির্মাতা মইনুল হোসেন মুকুল ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ তথ্যচিত্রে তার সেই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, মুকুল নির্মিত ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’একটি নিটোল তথ্যচিত্র। আমরা যে বাংলাদেশের গল্প পৃথিবীকে বলতে চাই, মইনুল হোসেন মুকুল মাত্র ১০ মিনিটের তথ্যচিত্রে সেটিই বলে দিয়েছেন। ‘পিস অব ওয়ার্ক, পিস অব আর্ট’-এর অনন্য উদাহরণ হিসেবে এই কাজ ঠিকে থাকবে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে নব নিযুক্ত প্রেসমিনিস্টার নাদিম কাদির বলেন, ব্রিটেনে এসে বাংলাদেশকে আবার নতুন করে অনুভব করলাম, বিউটিফুল বাংলাদেশ দেখে। একজন বিদেশিনীর চোখে মইনুল হোসেন মুকুল বাংলাদেশকে যেভাবে তুলে ধরলেন, এটিই বাংলাদেশের আসল পরিচয়।
মুকুলের এই কাজ ইতিবাচকভাবে দেশকে তুলে ধরতে আমাদের অনুপ্রাণিত করবে, নিঃসন্দেহে তা বলা যায়।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর নির্মাতা মইনুল হোসেন মুকুল দর্শকদের সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দেন।
তিনি জানান, ভবিষ্যতে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ নিয়ে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র তৈরির স্বপ্ন দেখেন, যে কাহিনীচিত্রে নতুন এক বাংলাদেশকে আবিষ্কার করে চমকে যাবে পুরো বিশ্ব।
অনুষ্ঠানে মইনুল হোসেন মুকুলকে ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বেঙ্গল আর্টস ফোরাম, আইসিসি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অর্থায়নে ২০১১ সালে খ্যাতিমান তথ্যচিত্র নির্মাতা মঈনুল হোসেন মুকুল নির্মাণ করেন ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ নামে এই তথ্যচিত্রটি।
তথ্যচিত্রটিতে একজন বিদেশিনীর চোখে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়, বাংলাদেশকে। জাগরেব ট্যুর ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও পোলান্ড আর্ট অ্যান্ড ট্যুর ফেস্টিভ্যালে অ্যাওয়ার্ড পায় মুকুলের এই তথ্যচিত্রটি।