গণিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য, অপরাধ কোচিং না করা। অভিমানে আত্মহত্যাই করল বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মালিয়া মারিয়া মৌলি (১৭)। গতকাল রোববার বিকেলে বরিশাল নগরীর নিজ বাসার বারান্দায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। মৌলি নগরীর শের-ই বাংলা সড়কের বায়তুল মিনা ভবনের বাসিন্দা মো. মোশারেফ হোসেনের মেয়ে।
মৌলির মা কোয়েল সাংবাদিকদের জানান, গতকাল দুপুর ১টায় কলেজ থেকে মৌলি বাসায় আসে। এ সময় সে মাকে জানায়, গণিত বিষয়ে সে ফেল করতে পারে না। তাকে ফেল করানো হয়েছে। এজন্য তার মন ভালো নেই। এই বলে সে নিজের ঘরে ঢুকে। পরে তার কোনো সাড়া না পেয়ে বারান্দায় গিয়ে মৌলিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৌলির বাবা মোশারেফ হোসেন কলেজ শিক্ষক। তার সংগঠন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি বরিশালের সভাপতি অধ্যক্ষ মহসিন উল-ইসলাম হাবুল পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, কলেজের গণিত শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়েনি মৌলি। এই কারণে তাকে বর্ষ পরীক্ষায় গণিত বিষয়ে ফেল করানো হয়েছে। বিষয়টি মৌলি শিক্ষকের কাছে জানতে চেয়েছিল। তখন শিক্ষক তাকে কোনো কিছু বলেছে, যা সে মেনে নিতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদ বলেন, ‘প্রাইভেট না পড়ায় পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ায় এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমি খোঁজ নিয়েছি কেউ প্রাইভেট পড়ায় কিনা। কিন্তু কেউ প্রাইভেট পড়ায় না। প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে লেখা হবে।’
তিনি আরও জানান, গত ১৪ ও ১৬ নভেম্বর কলেজে প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল কারো মনঃপুত না হলে, তাদের মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। এই সুযোগ দেওয়ার পরেও এটা হওয়ার কথা নয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, ‘এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’