পছন্দ হোক আর না হোক, মাথার চুলে হালকা পাক ধরা কিংবা চুল রুপালি হওয়া শুরু করলে সবাই কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। এ সময় কম-বেশি সবার মনেই দুটি প্রশ্ন ওঠে। প্রথমত, চুলে পাক ধরার কারণ কী এবং দ্বিতীয় চুলে পাক ধরা বিলম্বিত করার কোনো উপায় রয়েছে কিনা।
চুলে পাক ধরে কেন, এ প্রশ্ন সবারই। কিন্তু মাথার চুলের রং কেমন হবে তা নির্ধারণ করে মেলানিন। চুলের গ্রন্থিকোষ মেলানোসাইট নামক কোষ উৎপাদন করে থাকে। যা দুটি ভিন্ন ধরনের মেলানিন তৈরি করে। একটি ইউমেলানিন ও অন্যটি ফিওমেলানিন নামে পরিচিত।
ইউমেলানিন হচ্ছে এক প্রকার গাঢ় রঞ্জক। এই উপাদান যত বেশি থাকবে, ঠিক ততটাই গাঢ় রঙের হেবে চুল। এ কারণে ইউমেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকলে চুলের রং কালো কিংবা বাদামি হয়। আবার এই মেলানিন না থাকলে সোনালি রঙের হয় চুল। আবার চুলে ইউমেলানিন না থেকে যদি ফিওমেলানিন থাকে তাহলে চুলের রং লাল হয়।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, চুলের রং ধূসর হয় কেন? এর জন্য অবশ্য মেলানিন দায়ী। ধূসর চুলে মেলানিন নামক উপাদান সবচেয়ে কম থাকে। তাই চুল সাদা বা রুপালি কিংবা বর্ণহীন হয়ে থাকে। এ চুলে মেলানিনের পরিমাণ থাকে না।
চুলের রং পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে বার্ধক্য। ধূসর, রুপালি বা সাদা হয়ে থাকে বার্ধক্যজনিত কারণে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চুলের গ্রন্থিকোষের মেলানোসাইট কোষের মৃত্যু হতে থাকে। এতে মেলানিন উপাদান কমে যায়। ফলে সময়ের পরিক্রমায় চুল তার রং হারায়। এ কারণে চুলের রং রুপালি বা ধূসর হয়।
বিশেষজ্ঞরা চুলে পাক ধরার কারণ ইতোমধ্যে বের করতে পেরেছে। কিন্তু তারা এখনো চুলের মেলানোসাইট কোষ মারা যাওয়ার কারণ জানতে পারেনি। তবে বার্ধক্যের কারণ নিয়ে কিছু তত্ত্ব রয়েছে। দু’ধরনের বার্ধক্য রয়েছে। অন্তর্গত ও বহির্গত বার্ধক্য। প্রথমেই অন্তর্গত বার্ধক্যের জন্য দায়ী মৌলিক জৈবিক কাজ শেষ করা অভ্যন্তরীণ জৈবিক কোষগুলো।
এক্ষেত্রে একটি কোষ বিভাজিত হলে প্রতিবারই ডিএনএ হারায় তা। কোষগুলোর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ঠিকমত কাজের ক্ষমতাও হ্রাস পায়। উদাহরণ হিসেবে ধূসর চুলের জন্য মেলানোাইট কোষের ক্ষয়কে দায়ী করা হয়।
এদিকে বাহ্যিক সমস্যার কারণে বহির্গত বার্ধক্য হয়ে থাকে। মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস ও ভিটামিন বি-১২ এর অভাব বা অটোহাইমিউন রোগের মতো কারণে চুলের রং ধূসর বা রুপালি হতে পারে। এ কারণে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় চুলের রং ধূসর হওয়ার জন্য মানসিক চাপের যোগসূত্র রয়েছে বলেও তুলে ধরা হয়েছে। সূত্র: ডিসকোভার ম্যাগাজিন